Advertisement
E-Paper

শেষযাত্রায় শান্তি কই, বক্তব্য শ্মশানযাত্রীদের

বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর পাশাপাশি, সৎকারের গন্ধ যাতে বাইরে না ছড়ায়, শ্মশানযাত্রীদের জন্য বিশ্রামের জায়গার ব্যবস্থা করা, সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রাখার কথা পুরসভাগুলিকে বলা হয়েছিল।

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫১
বেহাল: গাড়ুলিয়ায় রত্নেশ্বর শ্মশান। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

বেহাল: গাড়ুলিয়ায় রত্নেশ্বর শ্মশান। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

শ্মশান চত্বরের পরিবেশ সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে— এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তা কোনও ক্ষেত্রেই হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর পাশাপাশি, সৎকারের গন্ধ যাতে বাইরে না ছড়ায়, শ্মশানযাত্রীদের জন্য বিশ্রামের জায়গার ব্যবস্থা করা, সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রাখার কথা পুরসভাগুলিকে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও কিছুই হয়নি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের শ্মশানে। শ্মশানযাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

বরাহনগর রতনবাবাবুর ঘাট থেকে কামারহাটি, পানিহাটি, ব্যারাকপুর, এমনকী হালিশহরের মতো সাজানো গোছানো শ্মশানঘাটেও শ্মশানযাত্রীদের সাচ্ছন্দ্যের কোনও ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে গঙ্গার ধারে ন’টি বড় শ্মশান আছে। তাতে বারাসত থেকে উত্তর ২৪ পরগনার অন্য মহকুমাগুলি ও নদিয়া এবং হুগলি থেকেও দেহ আনা হয়। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে জনসংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় প্রতিদিনই শ্মশানগুলিতে ভিড় থাকে। প্রতিটি শ্মশানেই লাইন পড়ে। সংস্কারের জন্য মাঝে মধ্যে বন্ধ রাখা হয় চুল্লি। তখন চাপ বাড়ে কাছাকাছি থাকা অন্য বৈদ্যুতিক চুল্লির শ্মশানে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাব সর্বত্রই। পানিহাটি শ্মশানে যাওয়ার রাস্তার অবস্থাও বেশ খারাপ।

ন’টি বড় শ্মশান ছাড়াও ১৩টি পুরসভার প্রায় প্রতিটিতেই কাঠের চুল্লিতে সৎকারের ব্যবস্থা আছে। কাঠের চুল্লিতে সৎকারের জন্য যে আয়োজন করতে হয়, সে জন্য অনেক সময় লোক পাওয়া যায় না। তা ছাড়াও আছে দুর্ঘটনা বা অস্বাভাবিক মৃত্যুতে জমে থাকা বেওয়ারিশ লাশ। সেগুলিও বৈদ্যুতিক চুল্লিতে সৎকার করলে খরচ এবং দূষণ দু’টিই কমে।

ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘শ্মশানগুলির সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি শ্মশানযাত্রীদের জন্য পরিস্রুত পানীয় জল, অপেক্ষা করার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘরের কথা সব পুরসভাগুলিকেই বলা হয়েছে।’’ ব্যারাকপুর-সহ অন্য পুরসভাগুলিতে শ্মশানের চিত্র কিছুটা বদলালেও শান্ত-সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়নি এখনও। বাঁধানো চাতাল, পানীয় জল সবই আছে। কিন্তু তার আশেপাশেই পড়ে থাকতে দেখা যায় দুর্গন্ধময় ছেঁড়া তোষক, বালিশ, ফুল-মালা। আর সস্তা সেন্টের তীব্র ঝাঁঝাল গন্ধের সঙ্গে পোড়া দেহের ধোঁওয়ার গন্ধে মানুষ অতিষ্ঠ। শীতের সময়ে উত্তুরে হাওয়ায় গন্ধ আরও বেশি করে ছড়ায়।

গারুলিয়ায় রত্নেশ্বর শ্মশানঘাটে সম্প্রতি নতুন চুল্লির কাজ চলছে। পুরপ্রধান সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘আমরা শ্মশান যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য একটা ঘর করেছি। আরও সুন্দর করে সেটি সাজানোর প্রক্রিয়া চলছে।’’ হালিশহরের পুরপ্রধান অংশুমান রায়ও বলেন, ‘‘গঙ্গার ধারে উদ্যানের জন্য একটি অনুদানের অপেক্ষায় আছি । একটি প্রার্থনা কক্ষ তৈরি হবে শ্মশানের মধ্যে। রামকৃষ্ণদেবের একটি মূর্তি বসানো হবে। এমন ভাবে ঘরটি হবে, যাতে বাইরের কোনও আওয়াজ বা গন্ধ না যায়।’’ অন্য শ্মশানগুলিতেও এমন ঘর কবে তৈরি হবে, সেই অপেক্ষায় এলাকাবাসী।

Barrackpore Cremation Decoration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy