Advertisement
১৮ মে ২০২৪

জিএসটি-র কোপে পড়ে ওষুধের আকাল বনগাঁয়

অনেকেই ওষুধের জন্য বারাসত, কলকাতায় আসতে হচ্ছে। কিন্তু তাতেও সবসময় সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। বাগদার হেলেঞ্চা এলাকার একটি ওষুধের দোকানের মালিক পিঙ্কি মজুমদার বলছিলেন, ‘‘অনেক রোগীকেই ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ ওষুধ সরবরাহ নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০৩:০১
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরে হার্টের অসুখে ভুগছেন অসীম দে। চিকিৎসকদের কথায় তাঁকে প্রতিদিন হার্টের ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু ওষুধ কিনতে গিয়ে ঘুম ছুটেছে বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধের। বনগাঁর বহু দোকান ঘুরেও জীবনদায়ী ওষুধ জোগাড় করতে পারেননি তাঁর পরিবার। শেষে ডাক্তারকে ফোন করে ওই ওষুধের পরিবর্তে অন্য ওষুধ কিনতে হয় তাঁকে।

অসীমবাবু বলেন, ‘‘দোকানদারেরা জানিয়ে দিয়েছেন, জিএসটি-র জন্য দামী ওষুধ বিক্রি তাঁরা সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখেছেন। ফলে জীবন-মরণের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া উপায় কী?’’ শুধু ওই বৃদ্ধ নন, সম্প্রতি বনগাঁ মহকুমার বহু মানুষই জীবনদায়ী ওষুধ পাচ্ছেন না। অনেকেই ওষুধের জন্য বারাসত, কলকাতায় আসতে হচ্ছে। কিন্তু তাতেও সবসময় সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। বাগদার হেলেঞ্চা এলাকার একটি ওষুধের দোকানের মালিক পিঙ্কি মজুমদার বলছিলেন, ‘‘অনেক রোগীকেই ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ ওষুধ সরবরাহ নেই। চিকিৎসকদের কাছে শুনে পরবর্তী ওষুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ কয়েকজন ওষুধ দোকানের মালিক জানান, জিএসটি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে অনেক সংস্থা বেশকিছু ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এর ফলেও সমস্যা বেড়েছে।

বনগাঁ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোশিয়েশন সূত্রে খবর, বনগাঁ মহকুমাতে পাইকারি ও খুচরো মিলিয়ে ওষুধের দোকানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪০০। তার মধ্যে ৫০% দোকানদারের এখনও জিএসটি রেজিস্ট্রেশন হয়নি। সংগঠনের বনগাঁ শাখার সম্পাদক অপূর্ব দাস বলেন, ‘‘প্রেসার, সুগার মতো রোগের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ এখন কম। জিএসটি রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে দোকানদারেরা এখনও অনেকেই কিছু জানেন না।’’

সংগঠন সূত্রে খবর, বছরে যে সব ওষুধের দোকানের লেনদেন ২০ লক্ষ টাকার নীচে তাঁদের জিএসটি রেজিস্ট্রেশন না করলেও চলবে। কিন্তু যাঁদের বেশি তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করাটা বাধ্যতামূলক। সংগঠনের জেলা সম্পাদক হীরণ্ময় কুণ্ডু অবশ্য জানিয়েছেন, জেলাতে প্রায় ৫ হাজারের মতো ওষুধ ব্যবসায়ী রয়েছেন। যাঁদের এখনও জিএসটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি তাঁদের সচেতন করতে সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। এখন ওষুধের সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক হচ্ছে। সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে অবশ্য কিছুদিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GST Medicines Crisis জিএসটি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE