Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Dattapukur Blast

দত্তপুকুরে বাজি বিস্ফোরণে হতাহত ১৫ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে, এ পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু

ছ’জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আট জনের। তাঁদের মধ্যে চার জন মহিলা, তিন জন পুরুষ। আহতদের মধ্যে একটি শিশু রয়েছে।

বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরের চিত্র।

বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরের চিত্র। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৩ ১৪:০৮
Share: Save:

সাতসকালে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের নীলগঞ্জে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। কিন্তু ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, কেঁপে উঠেছিল গোটা এলাকা। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে বারাসত শহর থেকেও। এখনও পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছিল, বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর তাঁরা পেয়েছেন। স্থানীয়দের আশঙ্কা, মৃত্যু হয়েছে আরও অনেকের।

বিস্ফোরণের পরেই আহতদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া হয়। ছ’জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আট জনের। তাঁরা হলেন, ২০ বছরের রেশমা খাতুন, ১৭ বছরের মাসুমা খাতুন, ৪০ বছরের আশুরা বিবি, সারিনা বিবি, ১৪ বছরের সানাউল আলি, ৫০ বছরের শমসের আলি, ৫২ বছরের সাইদুল আলি। আহতদের মধ্যে একটি ৮ বছরের বালকও রয়েছে। যদিও ঘণ্টা দেড়েক আগে বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, মোট চার জনের মৃত্যুর খবর তাঁরা তখনও পর্যন্ত পেয়েছেন।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শুধু কারখানার শ্রমিক নন, বিস্ফোরণের অভিঘাতে মৃত্যু হয়েছে পথচলতি মানুষেরও। এ ছাড়াও যে পাকা বাড়িটিতে বাজি তৈরি হত বলে জানা যাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকেই আটকে থাকতে পারেন বলে তাঁদের আশঙ্কা। স্থানীয়দের দাবি, মৃতের সংখ্যা দশ পেরিয়ে যেতে পারে। যদিও স্থানীয়দের এই দাবির আনুষ্ঠানিক সত্যতা স্বীকারের মতো জায়গায় প্রশাসন নেই। কারণ, এখনও ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। ফলে আরও কোনও দেহ ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে রয়েছে কি না, তা এখনও অজানা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গোটা এলাকায় বাজির কারবার চলত। যে বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেখানে ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে ঘরোয়া ভাবে বাজির মশলা তৈরি হত। কী করে পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ভাবে দিনের পর দিন ধরে বেআইনি বাজির কারবার চলত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সেই বাড়িতে বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি হত। মজুত বাজিতে আগুন লেগেই আচমকা বিস্ফোরণের ঘটনা। তার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, ওই দোতলা বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে আশপাশের একাধিক পাকা বাড়িও। স্থানীয়দের দাবি, বিস্ফোরণের অভিঘাতে দোতলা বাড়িটির ছাদের একটি অংশ গিয়ে পড়ে পাশের বাড়ির ছাদে। ফলে সেই বাড়িটিও আংশিক ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়তে হয় উর্দিধারীদের। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ ও শাসকদলের নেতাদের যোগসাজশেই বেআইনি ভাবে বাজির কারবার চলছিল। বার বার প্রশাসনে নালিশ জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্থানীয়দের ক্ষোভ প্রশমিত করে পুলিশবাহিনী উদ্ধারকাজে নামে। সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া বাড়িটির নীচে আরও কয়েক জন আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা। তাই ভাঙা কংক্রিটের চাঁই সরাতে আনা হয়েছে পে-লোডার। তা দিয়েই আপাতত কংক্রিটের স্তূপ সরানোর কাজ চলছে। ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকাজ জরিপ করছেন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dattapukur Blast police Hospital Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE