প্রতীকী ছবি।
তালা বন্ধ ঘর থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই ঘর থেকে এক মহিলার পচাগলা দেহ উদ্ধার করল।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ভ্যাবলা স্টেশনের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম অর্চনা নন্দী (৪৫)। বাড়ি কলেজপাড়ায় চাঁপাপুকুর রোডের নবপল্লিতে।
তবে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন মহিলা। তাঁর ছেলেদের দাবি, রবিবার দুপুর থেকে মায়ের খোঁজ মিলছিল না। মোবাইলও বন্ধ ছিল। মা যে ঘরে ভাড়া থাকতেন, সেই ঘরের বারান্দার গ্রিলের গেটে তালা লাগানো দেখে তার উপরে আরও একটি তালা লাগিয়ে দেন ছেলেরা। কিন্তু মঙ্গলবার গিয়ে ছেলেরা দেখেন, ওই গেটে একটি তালা ঝুলছে।
দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত অর্চনাকে খুন করা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত ভাবে জানানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন এক পুলিশ কর্তা। মৃতার তিন ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারো বছর ধরে স্বামী দেবপ্রসাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না অর্চনার। পারিবারিক বিবাদের জেরে আলাদা থাকতেন। সে সময় থেকেই বাড়ি ভাড়া নেন অর্চনা। ছেলেরা থাকেন স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। তবে দেবপ্রসাদ কাজের খোঁজে মুম্বইয়ে চলে যান। বাড়ি ছাড়লেও তিন ছেলের জন্য প্রতিদিন রান্না করে রাখতেন অর্চনা। দুপুরে এসে সেই খাবার নিয়ে যেত ছেলেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার ওই মহিলা পুরনো বাড়ি ছেড়ে ভ্যাবলা স্টেশনের কাছে ব্যবসায়ী রঘুনাথ দত্তের বাড়িতে ভাড়া আসেন। ওই দিনই বাড়ির মালিক সপরিবারে পুরী বেড়াতে যান। এ দিন পুলিশ গিয়ে দেখে, বারান্দার গ্রিলের গেটে তালা ঝুলছে। ভিতরে ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। অর্চনার তিন ছেলে বুদ্ধদেব, প্রদীপ এবং সোমনাথকে সেখানে আনা হয়।
বছর চব্বিশের সোমনাথ বলেন, ‘‘শনিবার দুপুরে খাবার নিতে এসে দেখি মা একজনের সঙ্গে কথা বলছেন। ওই কাকুকে আগেও মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছি।’’
প্রদীপ পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার দুপুরে খাবার আনতে গিয়ে বারান্দার গ্রিলে তালা ঝুলতে দেখা যায়। জানালা দিয়ে উঁকি মেরেছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, মা সে সময়ে ঘরে ছিলেন না। তখনই বাইরে গ্রিলের গেটে আরও একটা তালা লাগিয়ে চলে যান প্রদীপ। সেই থেকে অর্চনার মোবাইল বন্ধ। বুদ্ধদেবের কথায়, ‘‘বাইরের গেটে তালার উপরে ভাই আরও একটা তালা লাগিয়েছিল। অথচ আজ এসে দেখছি শুধুমাত্র ওই তালাটাই ঝুলছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, দেহ দেখে মনে হচ্ছে দিন তিনেক আগে মারা গিয়েছেন অর্চনা। প্রশ্ন উঠছে, গ্রিলের গেটের আর একটা তালা খুলল কে? রবিবার মায়ের মোবাইল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ছেলেরা কেন থানায় জানালেন না? যে ‘কাকু’র সঙ্গে মাকে কথা বলতে দেখেছিলেন ছেলে, তিনি কে?
অর্চনার ছেলেরা কাজকর্ম বিশেষ কিছু করে না। মা পরিচারিকার কাজ করতেন। তা হলে এত টাকা ভাড়া দিয়ে কী ভাবে চারজনের খাবার জোগাড় করতেন মহিলা?
পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy