Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

মৃত্যু-মিছিল দেগঙ্গায়

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপার শরীরে জ্বর আসায় বুধবার স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

উদ্বেগ: দেগঙ্গায় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ভিড়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

উদ্বেগ: দেগঙ্গায় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ভিড়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৭
Share: Save:

জ্বরে দু’জনের মৃত্যু হল দেগঙ্গায়।

শুক্রবার বেড়াচাঁপার অম্বিকানগরের বাসিন্দা দীপা সাধুখাঁ (২৩) এবং শনিবার সকালে হাদিপুরের শানপুকুর গ্রামের সোনালি খাতুন (৮) নামে এক দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর প্রাণ গিয়েছে জ্বরে ভুগে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজো উপলক্ষে দেগঙ্গার ভাসলিয়া কলোনির শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি অম্বিকানগরে এসেছিলেন দীপা। কথা ছিল, বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো কাটিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফিরবেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপার শরীরে জ্বর আসায় বুধবার স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কিছু ওষুধপত্র দিয়ে চিকিৎসক জানান, শুক্রবার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে। সেই মতো শুক্রবার সকালে ফের দীপাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই হঠাৎ মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসককেরা বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠান তাঁকে। সেখান থেকে আরজিকর। রক্ত নেওয়া হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। কিন্তু তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পেটের যন্ত্রণায় ছটপট করতে করতে খিঁচুনি দেখা দেয় দীপার। মারা যান তিনি। দীপার বাবা চঞ্চল মণ্ডল বলেন, ‘‘রিপোর্ট আসার আগেই মারা গেল একমাত্র মেয়েটা।’’

অন্য দিকে, হাদিপুর শানপুকুর গ্রামের সোনালির বুধবার জ্বর আসে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি বারাসত জেলা হাসপাতালে যেতে বলেন। সোনালির বাবা জামাল মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই দিনই বারাসতে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রক্ত পরীক্ষা হয়। শুক্রবার রাতে রক্তের রিপোর্ট দেখে আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসকেরা।’’ তিনি জানান, সঙ্গে কেউ না থাকায় রাতে মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। শনিবার সকালে আরজিকর নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায় মেয়েটি।

অন্য দিকে, শনিবার হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। এই হাসপাতালও উপচে পড়ছে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ভিড়ে। হাসপাতালের একটি ঘর বন্ধ পড়েছিল। সেটি খুলিয়ে সেখানে রোগী ভর্তির নির্দেশ দেন জেলাশাসক।

সিএমওএইচ রাঘবেশ মজুমদার জানান, চিকিৎসকের অভাব আছে, এটা ঠিক। আপাতত হাবরা হাসপাতালে দু’জন অতিরিক্ত ডাক্তার ও নার্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবন থেকে আরও চারজন চিকিৎসক ও আটজন নার্স পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। যেখানে যেখানে সম্ভব, স্বাস্থ্য শিবির করা হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২২ জন চিকিৎসক আছেন এখানে। আপাতত সকলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ছুটি বাতিল হয়েছে নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রেও।

হাসপাতালের বাইরে পুরসভা স্বাস্থ্য শিবির করেছে। সেখানে দেখভালে দেখা গেল পুরপ্রধান নীলিমেশ দাসকে। জেলাশাসক জানান, বেশ কিছু জায়গায় জ্বর ছড়িয়েছে। প্রশাসনিক ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ, সাধারণ মানুষকেও জ্বরের হাত থেকে বাঁচতে সচেতন হতে হবে। মশারি টাঙানো, বেশি করে জ্বল খাওয়া, এলাকা সাফসুতরো রাখার দিকে সকলকে নজর রাখতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Unknown Fever Deganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE