Advertisement
E-Paper

ট্রেনের কামরা ছয়লাপ নানা ধরনের বিজ্ঞাপনে

অবস্থা এমন হয়েছে যে, ‘রেলের কামরায় ধূমপান নিষেধ’-এর মতো জরুরি সতর্কবার্তাগুলিও ঢাকা পড়ে গিয়েছে পোস্টারের নীচে।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪২
দৃশ্যদূষণ: লোকাল ট্রেনের কামরা। নিজস্ব চিত্র

দৃশ্যদূষণ: লোকাল ট্রেনের কামরা। নিজস্ব চিত্র

নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা না মানলে ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত জেল এবং পাঁচশো থেকে দু’হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানও রয়েছে। তবুও গোপনে মদ ছাড়ানো থেকে যৌন রোগের চিকিৎসা, মাসাজ পার্লার থেকে ঘরে বসেই নিশ্চিন্ত আয়ের সুযোগ— এমন বিজ্ঞাপনের পোস্টার, লিফলেটে ছেয়ে গিয়েছে পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনের কামরাগুলি।

রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ট্রেনের কামরায় পোস্টার বা যে কোনও কাগজ সাঁটা, লেখা নিষিদ্ধ। কামরায় ফলাও করে প্রচারও করা থাকে সে কথা। অথচ সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কামরায় কামরায় সাঁটা হচ্ছে নানা পোস্টার। এতে দৃশ্যদূষণ তো হচ্ছেই, অনেক পোস্টারে এমন কথা লেখা থাকছে যে তা দেখে লজ্জায় পড়ে যাচ্ছেন অনেকেই। অবস্থা এমন হয়েছে যে, ‘রেলের কামরায় ধূমপান নিষেধ’-এর মতো জরুরি সতর্কবার্তাগুলিও ঢাকা পড়ে গিয়েছে পোস্টারের নীচে।

সমস্যাটি স্বীকার করে নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই ট্রেন পরিষ্কার করা হয়। দূরপাল্লার ট্রেনে লাগাতে না পারলেও লোকাল ট্রেনগুলিতে পোস্টার লাগানো চলছেই। এ ক্ষেত্রে জরিমানাও করা হয়।’’

এ ক্ষেত্রে রেল কর্মীদের সচেতন হওয়া এবং কেউ ট্রেনের কামরায় পোস্টার মারছে দেখলে যাত্রীদের তরফে বাধা দিয়ে রেল পুলিশকে জানাবার কথাও বলেছেন রবিবাবু।

বস্তুত এই সচেতনতার জন্য বছর কয়েক আগে এই সব লোকাল ট্রেনে লেখালেখি কিংবা পোস্টার সাঁটা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বারাসত কারশেডে ট্রেন ঢুকতেই নিয়ম করে সমস্ত পোস্টার তুলে দিতেন কর্মীরা। পোস্টার মারার পরে বারবার তা তুলে দেওয়ায় লাভ হচ্ছে না বলে বাধ্য হয়ে পোস্টার লাগানো বন্ধ করে দেয় বিজ্ঞাপনদাতারা। এর পরে বেশ কিছু দিন ঝকঝকে ছিল ট্রেনের কামরাগুলি। কিন্তু লাগাতার নজরদারির অভাবে আবার পুরনো নোংরা চেহারায় ফিরে গিয়েছে ট্রেনগুলি।

নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বেআইনি জেনেও যারা ট্রেনে পোস্টার মারে, তাদের বিরুদ্ধে রেল ব্যবস্থা নেয় না বলেই বিষয়টি এমন জায়গায় পৌঁছেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, নজরদারির অভাবেই এমনটা হচ্ছে। এই সব বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাদের নাম, ঠিকানা এমনকী অনেক ক্ষেত্রে ফোন নম্বরও পোস্টারে থাকে। তবুও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না রেল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সাধারণত চলন্ত ট্রেনে নয়, কারশেড বা স্টেশনে ট্রেন থেমে থাকার পরে ভোরের দিকেই পোস্টার মারা হয়। যাত্রীদের অভিযোগ, রেল পুলিশ বা কর্মীদের অজান্তে এটা করা সম্ভব নয়।

এই অভিযোগ যে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তার প্রমাণ মিলেছে একটু খোঁজখবর করতেই। বনগাঁ লোকাল ট্রেনে আটকানো যৌন রোগের চিকিৎসার একটি বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে ফোন করা হল।

কেন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ট্রেনের কামরায় পোস্টার লাগিয়েছেন প্রশ্ন করতেই উত্তর এল, এর জন্য খরচ করতে হয়েছে। কিসের খরচ? ওই বিজ্ঞাপনদাতার জবাব, হকারদের দিয়ে পোস্টার লাগানোর কাজ করাতে হয়েছে। ট্রেনে পোস্টার মারার জন্য সেই হকারেরা আলাদা করে রেল পুলিশকে টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করলেন ওই ব্যক্তি। রেল পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ।

Train
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy