Advertisement
E-Paper

শিশু-মৃত্যুর জেরে মার চিকিৎসককে 

ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল অরূপ। অভিযোগ, তারই মধ্যে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও অন্য চিকিৎসকেরা তাঁদের বিশ্রামকক্ষে চলে যান বলে দাবি অরূপের পরিবারের। তাঁদের ডেকেও আর সাড়া মেলেনি। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৭
প্রহৃত: চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

প্রহৃত: চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনায় জখম শিশুর মৃত্যুতে চিকিৎসকদের মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল।

সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর দু’য়েকের মৃত শিশুটির নাম অরূপ মণ্ডল। বাড়ি বাসন্তীর কুমিরমারি। খেলতে খেলতে রাস্তার উপরে চলে এসেছিল সে। সে সময়ে একটি মোটরভ্যান তাকে ধাক্কা মারে।

পরিবারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে তাকে বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অভিযোগ, শিশুটিকে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক এনকে বসু ভাল করে না দেখে মাথার সিটি স্ক্যান করতে পাঠিয়ে দেন। সিটি স্ক্যান করিয়ে নিয়ে আসার পরে তার রিপোর্ট না দেখেই বলা হয় বহির্বিভাগে গিয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখাতে। কিন্তু ওই বিভাগের চিকিৎসক আবার বাচ্চাটিকে জরুরি বিভাগে পাঠিয়ে দেন। অরূপকে স্যালাইন, অক্সিজেন দিতেও দেরি হয় বলে অভিযোগ।

ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল অরূপ। অভিযোগ, তারই মধ্যে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও অন্য চিকিৎসকেরা তাঁদের বিশ্রামকক্ষে চলে যান বলে দাবি অরূপের পরিবারের। তাঁদের ডেকেও আর সাড়া মেলেনি।

এরই মধ্যে কোলেই ঢলে পড়ে অরূপ। শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। শিশুটির পরিবার এ বার ক্ষোভে ফেটে পড়েন। চিকিৎসক এনকে বসুকে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন। ওই চিকিৎসককে বাঁচাতে এগিয়ে এলে জখম হন সুলগ্না দাস ও অভিষেক মুখোপাধ্যায় নামে আরও দুই চিকিৎসক। মাথা ফাটে এনকে বসুর।

আতঙ্কিত চিকিৎসকেরা একটি ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। ক্ষিপ্ত জনতা চেয়ার তুলে দরজায় মারতে থাকে। লাথি মেরে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে পড়ে কেউ কেউ। আর একপ্রস্ত মারধর করা হয় চিকিৎসকদের।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ক্যানিং থানার পুলিশ। তারাই ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে চিকিৎসকদের উদ্ধার করে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসকেরা নিরাপত্তার দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে কাজ বন্ধ করে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘শিশুটিকে যখন নিয়ে আসা হয়, তখনই সে মৃতপ্রায়। মাথায় আঘাত ছিল। মস্তিস্কে রক্তপাত হচ্ছিল। সে কারণেই মৃত্যু হয়। আমরা যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলাম। অক্সিজেন, স্যালাইন সব কিছু দেওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, শিশুটি মারা যাওয়ার পরে অযথাই গাফিলতির অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

অরূপের বাবা সুরজিৎ বলেন, ‘‘যখন ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে আসি, তখনও চনমনে ছিল। চিকিৎসকরা তার গায়ে পর্যন্ত হাত দেননি। আমাদের বারবার একদিক থেকে আর একদিকে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা সে ভাবে শুরুই হয়নি। উল্টে আমাদের নানা ভাবে হয়রানি করা হয়েছে।’’ হাসপাতালের সুপার অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি অসুস্থতার কারণে ছুটিতে আছি। ঠিক কী হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

Child Death Doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy