E-Paper

‘২৫ কোটির বুস্টার পাম্প কি জলে গেল!’

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ১, ২, ৩, ৭ ,৮, ১৫ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়েছে। স্থানীয় ৫২ ফ্যামিলি এলাকায় গিয়ে দেখা বুস্টার পাম্পই জলমগ্ন।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ০৭:২০
ভোগান্তিতে বাসিন্দারা।

ভোগান্তিতে বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র ।

টানা বৃষ্টিতে এ বারও জলমগ্ন হাবড়া শহরের একাংশ। প্রায় পঁচিশ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি নতুন বুস্টার পাম্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই।

বর্ষার সময়ে নাগাড়ে বৃষ্টিতে হাবড়া পুর এলাকা জলমগ্ন হয় ফি বছর। জমা জল দ্রুত বের করে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হাবড়া শহরে দু’টি আধুনিক বুস্টার পাম্প তৈরি করা হয়। পুরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, বুস্টার পাম্প তৈরি হয়ে গেলে শহরের মানুষ জমা জলের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবেন। প্রায় পঁচিশ কোটি টাকা ব্যয়ে কেএমডিএ বুস্টার পাম্প দু’টি বসায়। কিছু দিন আগে তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়। কিন্তু জমা জলের দুর্ভোগ থেকে শহরের বাসিন্দারা মুক্তি পেলেন না। এই মরসুমে কোথাও ঘরে জল, উঠোনে জল। কোথাও রাস্তা জলমগ্ন। জলমগ্ন মানুষেরা কলার ভেলা বা টিউবকে হাওয়া দিয়ে ফুলিয়ে ভেলার মতো করে ব্যবহার করছেন যাতাযাতের জন্য। এর মধ্যে সাপ এবং জোঁকের উপদ্রব শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত।

পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ১, ২, ৩, ৭ ,৮, ১৫ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়েছে। স্থানীয় ৫২ ফ্যামিলি এলাকায় গিয়ে দেখা বুস্টার পাম্পই জলমগ্ন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেটি গত চার দিন ধরে চালানো যাচ্ছে না। নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা উন্নতি সাহা বলেন, ‘‘ঘরে জল থইথই করছে। সাপ আর জোঁকের কামড় থেকে বাঁচিয়ে চলাটা দায় হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। জল সরছে না এক সপ্তাহ ধরে। তা হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বুস্টার পাম্প তৈরি করে কী লাভ হল?" আর এক বাসিন্দা সুনীল মজুমদার বলেন, "কোটি কোটি টাকা খরচ করে দু’টি বুস্টার পাম্প তৈরি করা হল। অথচ, এ বারও জলে ডুবল শহর!’’

হাবড়া শহরের বাসিন্দা সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘হাবড়া শহরের মানুষ জলের তলায়। মানুষের দুর্ভোগ চরমে। এ বার জমা জলে ডেঙ্গি ছড়াবে। মানুষ আক্রান্ত হবেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বুস্টার পাম্প বসিয়ে শুধু টাকা অপচয় হল।’’ বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘শহরের ১৪টি ওয়ার্ড জলমগ্ন। বুস্টার পাম্প অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হয়েছে। টাকা সম্পূর্ণ জলে চলে গেল।’’

কেন জল বের করা যাচ্ছে না?

পুরপ্রধান তৃণমূলের নারায়ণচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘বুস্টার পাম্প সচলই ছিল। সদ্য জল বের হওয়ার নিকাশি ব্যবস্থা নষ্ট হয়েছে। তা ছাড়া, জল নাংলা বিলে ফেলা হয়, সেই বিলও জল ভরে গিয়েছে। দু’টি বুস্টার পাম্প এবং ৩০টি পাম্প চালানো হচ্ছে। তবে জল ধীর গতিতে নামছে।’’

পুরপ্রধান জানান, জমা জল পদ্মা নালা হয়ে নাংলা বিলে ফেলা হয়। পদ্মা নালা অনেক জায়গায় মজে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে ২৭ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ওই টাকা পাওয়া গেলে পদ্মা নালা সংস্কার করা হবে। কংক্রিটের নালা তৈরি করা হবে।

বুস্টার পাম্প তৈরির আগে কেন জল বের করার পথ তৈরি করা হবে না, সে প্রশ্নই তুলছেন জলবন্দি শহরবাসী।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Habra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy