এখানেই শিলান্যাস হয়েছিল প্রকল্পের। নিজস্ব চিত্র
রেললাইন হবে বলে ঘটা করে শিলান্যাস হয়েছিল। আশায় বুক বেঁধেছিলেন মানুষজন। কিন্তু তারপর কেটে গিয়েছে বছর পনেরো। জয়নগর থেকে রায়দিঘি পর্যন্ত নতুন রেললাইন পাতার কাজ এগোয়নি এতটুকু।
২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন জয়নগর-মজিলপুর স্টেশন থেকে রায়দিঘি পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার রেললাইন তৈরির প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। রায়দিঘিতে মঞ্চ বেঁধে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে শিলান্যাস অনুষ্ঠান হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন।
রায়দিঘি থেকে সব থেকে কাছের স্টেশন মথুরাপুরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। ট্রেন ধরতে হলে এলাকার মানুষকে অটো বা ছোট গাড়িতে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। সমস্যা সমাধানের জন্য প্রত্যন্ত এই এলাকার সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
এই রেলপথ হলে রায়দিঘির পাশাপাশি মথুরাপুর ১, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা ব্লকের বহু মানুষও উপকৃত হতেন। স্থানীয় মানুষ জানালেন, প্রত্যন্ত এই সব এলাকা থেকে গাড়ি ধরে স্টেশনে গিয়ে তারপর ট্রেন ধরতে সময় ও খরচ দুটোই বেড়ে যায়। কৃষকেরা কৃষিজাত বিভিন্ন পণ্য শহরে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়েন। রোগীদের সহজে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় না। সরাসরি ট্রেন চালু হলে সমস্যার সমাধান হত। রায়দিঘির বাসিন্দা দেবাশিস হালদার, রমেশ দাসেরা জানান, প্রকল্পের শিলান্যাসের পরে এলাকার মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, যে জায়গায় শিলান্যাসের অনুষ্ঠান হয়েছিল, সেখানে এখন আগাছার জঙ্গল। শিলান্যাসের পাথরও কেউ ভেঙে দিয়েছে। রায়দিঘির প্রাক্তন বিধায়ক ও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ঘটা করে শিলান্যাসের পরেও কোনও কাজ হল না। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।”
ওই এলাকার বাসিন্দা মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি প্রদ্যোৎ বৈদ্য বলেন, “রেললাইন পাতার জন্য জমি হস্তান্তরের যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে তুলে দিতে পারেনি এই সরকার। শাসকদলের ব্যর্থতায় বঞ্চিত রায়দিঘির মানুষ।”
রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক অলোক জলদাতা অবশ্য দায় চাপিয়েছেন কেন্দ্রের উপরে। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতায় আজও রেলপথ কাজ শুরু হল না। এই রাজ্যের আর পাঁচটি প্রকল্পের মতো রেলপথ থেকেও আমরা বঞ্চিত হলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy