Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Death

Death: তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু বাবা ও ছেলের, আহত মা-মেয়ে

পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ির একতলার কারখানায় কাঁচা লোহায় হিট ট্রিটমেন্টের কাজ করছিলেন গৃহকর্তা শৈলেন। প্রথমে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

শৈলেন হাজরা (বাঁ দিকে) এবং স্বপ্ননীল হাজরা।

শৈলেন হাজরা (বাঁ দিকে) এবং স্বপ্ননীল হাজরা। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২২ ০৬:০৬
Share: Save:

বাড়ির ভিতরে কারখানায় কাজ করার সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বাবা ও বড় ছেলের। তাঁদের বাঁচাতে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলেও বেঁচে গিয়েছেন মা ও মেয়ে। মঙ্গলবার সাতসকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে জগাছা থানা এলাকার ইছাপুর পূর্বপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দু’জনের নাম শৈলেন হাজরা (৫৭) এবং স্বপ্ননীল হাজরা (২১)।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ির একতলার কারখানায় কাঁচা লোহায় হিট ট্রিটমেন্টের কাজ করছিলেন গৃহকর্তা শৈলেন। প্রথমে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বড় ছেলে স্বপ্ননীল। স্বামী ও বড় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন স্ত্রী। বাবা, দাদা আর মাকে পড়ে থাকতে দেখে বাঁচাতে গিয়ে তড়িদাহত হন হাজরা দম্পতির মেয়ে। তবে ছোট ছেলের তৎপরতায় মা ও মেয়ে কোনওক্রমে বেঁচে যান। কিন্তু শৈলেন এবং স্বপ্ননীলকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ শৈলেন একতলায় কারখানায় যান। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করেই হিট ট্রিটমেন্টের একটি যন্ত্রে হাত দিয়ে দেন। তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। মিনিট দশেক বাদে শৈলেনের বড় ছেলে স্বপ্ননীল নীচে গিয়ে দেখেন, বাবা মেঝেতে অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন। শৈলেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন বুঝতে পেরে লোহার রড দিয়ে বাবাকে সরাতে গিয়ে স্বপ্ননীলও মাটিতে পড়ে যান। আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন স্বপ্ননীলের মা। স্বামী ও বড় ছেলের গায়ে হাত দিতে তড়িদাহত হন তিনিও। একই ভাবে তড়িদাহত হন মেয়ে। অবশেষে শৈলেনের ছোট ছেলে ইন্দ্রনীল উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বাড়ির মেন সুইচ বন্ধ করে দেয়।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, গোটা পূর্বপাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সদর দরজায় হেলান দিয়ে কেঁদে চলেছে পরিবারের ছোট ছেলে ইন্দ্রনীল। কোনও রকমে সে বলে, ‘‘বাবা উপরে শুয়েছিল। সকালে কারখানায় নেমে যন্ত্রে হাত দিতেই নীচে পড়ে যায়। আর জ্ঞান ফেরেনি। বাবা, দাদা, মা ও দিদির কাছে গিয়ে বুঝতে পারি কী ঘটেছে। সঙ্গে সঙ্গে মেন সুইচটা বন্ধ করে দিই। প্রতিবেশীদের খবর দিই। ওঁরাই সকলকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’’

পুলিশ জানায়, অচৈতন্য অবস্থায় শৈলেন ও স্বপ্ননীলকে প্রথমে স্থানীয় দু’টি নার্সিংহোম ও পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই বাড়ির একতলায় কাঁচা লোহায় হিট ট্রিটমেন্টের কাজ হয়। এটা শৈলেনদের পারিবারিক ব্যবসা। পুলিশের অনুমান, ইলেক্ট্রিক ফার্নেস মেশিনের সুইচ বন্ধ করতে ভুলে যাওয়ার কারণেই হয়তো এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। দু’টি দেহের ময়না-তদন্তও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Electrocution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE