Advertisement
০৭ মে ২০২৪
coronavirus

Durga Puja 2021: দেখা নেই ক্রেতার, ঝিমিয়েই পুজোর বাজার

অনেকের ধারণা, করোনা সংক্রমণের ভয়ে বেশিরভাগ দোকানে না এসে অনলাইনে কেনাকাটা করছেন। ফলে দোকানে ভিড় হচ্ছে না।

ফাঁকা: ক্রেতার অপেক্ষায় দোকানিরা। হাবড়ায়।

ফাঁকা: ক্রেতার অপেক্ষায় দোকানিরা। হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৪৫
Share: Save:

পুজোর বাকি আর মাস খানেক। এই সময়টা বাজার উপচে পড়ে কেনাকাটার ভিড়ে। কিন্তু এ বার সেই ভিড় নেই বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের। রবিবার দুই জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে কেনা কাটার তেমন উৎসাহ চোখে পড়ল না। করোনা ও লক ডাউন পরিস্থিতিতে মানুষের আয়ে কোপ পড়েছে। তার জেরেই ভিড় কমছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকের ধারণা, করোনা সংক্রমণের ভয়ে বেশিরভাগ দোকানে না এসে অনলাইনে কেনাকাটা করছেন। ফলে দোকানে ভিড় হচ্ছে না।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম বড় বাজার হাবড়া। প্রতিবছর পুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকেই এখানে দূর দুরান্তের ক্রেতারা কেনাকাটা করতে আসেন। কিন্তু এবার এখনও পুজোর কেনাকাটা কার্যত শুরু হয়নি। কাপড় ব্যবসায়ী শুভেন্দু সাধুখাঁ বলেন, “মালপত্র তুলে বসে রয়েছি। এখনও ক্রেতাদের দেখা নেই।” স্বর্ণ ব্যবসায়ী গণেশ কর্মকার বলেন, “পুজোর মরসুমে দোকানে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। কোনও দিন এক-দু’জন আসছেন। কোনও দিন কেউ আসছেন না।” বনগাঁতেও এখনও মানুষ সেভাবে কেনাকাটা শুরু করেননি। বনগাঁর বস্ত্র ব্যবসায়ী বাপন সাহা বলেন, “গত বছর এই সময়ে যা বেচা-কেনা হয়েছিল, এবার তার থেকে ২০ শতাংশ কম হয়েছে। দোকানে মালপত্র তুলে রেখেছি।” বনগাঁর একটি বিউটি পার্লারের মালিক বলেন, “পুজোর এক মাস আগে থেকেই মহিলারা ভিড় করতেন। এবার হাতে গোনা কয়েকজন মহিলা এসেছেন।”

একই ছবি বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন বাজারেও। হিঙ্গলগঞ্জ বাজারের পোশাক ব্যবসায়ী মানস নাথ বলেন, “ক্রেতার সংখ্যা খুব কম। যা মাল তুলেছি, জানি না তা বিক্রি হবে কিনা।” হাসনাবাদ বাজারের দীর্ঘদিনের পোশাক ব্যবসায়ী মৃণাল ঘোষ বলেন, “পুজোর আগে এই সময়টায় শনি ও রবিবার ভালই বিক্রি হত। কিন্তু এবার ক্রেতা খুবই কম। যারা আসছেন, তাঁরাও কম কেনাকাটা করছেন।” হাসনাবাদ বাজারে রবিবার কেনাকাটা করতে এসেছিলেন কয়েকজন ক্রেতা। তাঁদেরই একজন নীরা রায় বলেন, “প্রতি বার কলকাতায় গিয়ে কেনাকাটা করি। এবার বাজেট অনেক কম। তাছাড়া করোনার ভয় রয়েছে। তাছাড়া ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক হয়নি। তাই কলকাতায় গেলাম না। হাসনাবাদ বাজার থেকেই অল্প কিছু কেনাকাটা করলাম।”

বসিরহাটে বেশ কয়েকটি শপিং মল রয়েছে। সেখানেও তেমন ভিড় দেখা যাচ্ছে না। মল কর্তৃপক্ষ জানায়, অন্যান্য বার এই সময়টা কেনা কাটার ভালই ভিড় হয়। কিন্তু এবার সেই ভিড় নেই। বসিরহাটের পোশাক ব্যবসায়ী রতন মণ্ডল বলেন, “বড় দোকান অথবা শপিং মলে তবুও কিছু মানুষ আসছেন। ছোট দোকানিদের অবস্থা ভয়াবহ।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও এখনও তেমন জমেনি পুজোর বাজার। এ দিন ভাঙড়, ঘটকপুকুর, পোলেরহাট-সহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে কোথাও ভিড় চোখে পড়ল না। পুজো উপলক্ষে সম্প্রতি ঘটকপুকুর বাজারে একটি বহুজাতিক সংস্থা শপিং মল খুলেছে। সেখানেও ক্রেতার দেখা নেই। ব্যবসায়ীরা জানান, পুজোর আগে দোকানে নতুন মাল তুলেছেন। কিন্তু এখনও বিক্রি বাটা শুরু না হওয়ায় বাড়ছে দুশ্চিন্তা। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবাতেও রবিবার দিনভর কার্যত ফাঁকা ছিল বাজার। ক্যানিং বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী অজয় শাহ বলেন, “লকডাউনের জেরে সারা বছরটাই বাজার খারাপ গিয়েছে। সকলেই পুজোর বাজারের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। কিন্তু এখনও সে ভাবে ক্রেতার দেখা মিলছে না।”

ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারের কাছে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সারি দিয়ে রয়েছে শাড়ি, জামা, কাপড়ের দোকান। অন্যান্য বার এই সময় প্রচুর ভিড় হয় দোকানগুলিতে। কিন্তু রবিবার বিকেলে কেনাকাটার উৎসাহ তেমন চোখে পড়ল না। বস্ত্র ব্যবসায়ী গোপাল নিয়োগী বলেন, “গত বছর এই সময়টা একেবারেই বেচা-কেনা হয়নি। এবার তাও কিছু মানুষ আসছেন। আশা করছি, বিশ্বকর্মা পুজোর পর কেনাকাটা বাড়বে।” এ দিন কুলপির রাধানগর এলাকা জামা কাপড় কিনতে এসেছিলেন তপতী মণ্ডল। তাঁর কথায়, “করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক অনটনের মধ্যে রয়েছি। কিন্তু বাচ্চাদের বায়না তো রাখতে হবে। তাই ওদের জন্য কিনতেই এসেছি।”

এ দিন যে সকল ক্রেতারা এসেছিলেন, তাঁদের অনেককেই দূরত্ব বিধি না মেনে কেনা কাটা করতে দেখা যায়। কারও কারেও মাস্কও ছিল না। অনেকেরই আশঙ্কা, যত ভিড় বাড়বে, তত শিকেয় উঠবে করোনা বিধি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus Durga Puja 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE