বিপত্তি: চিকিৎসকের চেম্বারের দশা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
গাছের শুকনো ডাল ভেঙে ফের বিপত্তি যশোর রোডের ধারে। এ বার ডাল ভেঙে পড়ল চিকিৎসকের চেম্বারের ছাদে। জখম হয়েছেন ওই চিকিৎসক ও চার রোগী। দু’জনকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পেট্রাপোল থানার উত্তর ছয়ঘরিয়া মোড়ে। জখম চিকিৎসকের নাম দেবনারায়ণ দাস। বাকিরা হলেন নিত্যানন্দ কুণ্ডু, নূপুর দে, গোপাল অধিকারী।
ঘটনার পরে এলাকার মানুষের ক্ষোভ দেখান। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘আর কত দুর্ঘটনা ঘটলে তবে প্রশাসনের টনক নড়বে!’’ অনেককেই বলতে শোনা গেল, ‘‘প্রয়োজনে এ বার আমরা নিজেরাই বিপজ্জনক ডাল কেটে ফেলব। অল্পের জন্য এ দিন বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। মৃত্যুও তো ঘটতে পারত!’’
উত্তর ছয়ঘরিয়া মোড় এলাকায় যশোর রোডের পাশে টিন ও ইটের তৈরি চেম্বারে বসে এ দিন রোগী দেখছিলেন দেবনারায়ণ। বেলা তখন প্রায় সাড়ে ১১টা। হঠাৎই বেশ বড় আকারের একটি ডাল মড়মড় করে তাঁর চেম্বারের উপরে ভেঙে পড়ে। দেবনারায়ণ ও নিত্যানন্দকে বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনাস্থলে আসেন ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ছয়ঘরিয়া এলাকায় যশোর রোডের পাশে প্রাচীন গাছগুলিতে বেশ কিছু ডাল বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে। বারবার ডাল ভেঙে বিপত্তি ঘটছে। মৃত্যুও ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও ডাল কাটা হচ্ছে না।’’
এ দিন ঘটনার পরে পঞ্চায়েতের তরফে বনগাঁর বিডিও সঞ্জয়কুমার গুছাইতের কাছে ডাল কাটার দাবি জানানো হয়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’
সাম্প্রতিক সময়ে যশোর রোডে গাছের ডাল ভেঙে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনার পরে এলাকার লোকজন বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা মরা ও শুকনো ডাল কাটার দাবি তুলেছিলেন। মণ্ডলপাড়ায় অটোর উপরে ডাল পড়ে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছিল কয়েক বছর আগে।
যশোর রোড দিয়ে রোজ হাজার হাজার যানবাহন যাতায়াত করে। অভিযোগ, সড়কে যাত্রীসুরক্ষা বলে কিছু নেই। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এ পথে গাড়ি চালাতে হচ্ছে চালকদের। পথচারী, যানচালক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে গত বছর নভেম্বর মাসে ডাল কাটার কাজ শুরু হয়েছিল। জাতীয় সড়কের (ডিভিশন ৫) নির্বাহী বাস্তুকার অজয়শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে গাইঘাটার বকচরা এলাকা থেকে চাঁদপাড়া পর্যন্ত ডালপালা কাটা হয়েছে। বনগাঁ ও পেট্রাপোল এলাকাতেও ভোটের পরে ডাল কাটার কাজ হবে। দরপত্র ডাকার কাজ শেষ হয়েছে। ভোটের কারণে ওয়ার্ক-অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে না।’’
বাসিন্দাদের অবশ্য প্রশ্ন, ভোট শেষ হওয়ার আগেই যদি শুকনো গাছের ডালের আঘাতে কারও মৃত্যু হয়, তার দায় কে নেবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy