Advertisement
E-Paper

টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রতারণা

বাবলুর নিজের নামে জমি নেই। তিনি প্রস্তাব দেন, তাঁর শ্বশুরের জমিতে টাওয়ার বসানো যাবে কিনা।  তাতে সংস্থার আপত্তি ছিল না। তারা বাবলুকে পরে ফোনে জানায়, টাওয়ার বসাতে গেলে ৩০ হাজার টাকার স্বাস্থ্যবিমা করাতে হবে। ওই টাকা জমা দিতে হবে অন্য একটি সংস্থার নামে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৭
ধৃত: বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: বনগাঁয়। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে মোবাইলের টাওয়ার বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল ৪ জনকে। শুক্রবার বারাসত থেকে গ্রেফতার করা হয় দীপঙ্কর পাল, সুরজিৎ রায়, সৈরিক দেব ও শান্তনু দাসকে। তাদের বাড়ি গিরিশ পার্ক, দত্তপুকুর ও চাকদায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরের শক্তিগড় এলাকার বাসিন্দা বাবলু ভাস্কর দোকানে কাজ করেন। জানুয়ারি মাসে একটি অচেনা নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। ও প্রান্তের ব্যক্তি নিজের পরিচয় দেয় একটি মোবাইল সংস্থার আধিকারিক হিসাবে। বাবলুকে সে জানায়, তিনি যেহেতু একই সংস্থার কানেকশন ব্যবহার করেন, সে কারণে তাঁকে একটি ‘অফার’ দেওয়া হচ্ছে। তিনি চাইলে বাড়িতে ওই সংস্থার টাওয়ার বসাতে পারেন। এ জন্য তিনি ভাড়া পাবেন।

বাবলুর নিজের নামে জমি নেই। তিনি প্রস্তাব দেন, তাঁর শ্বশুরের জমিতে টাওয়ার বসানো যাবে কিনা। তাতে সংস্থার আপত্তি ছিল না। তারা বাবলুকে পরে ফোনে জানায়, টাওয়ার বসাতে গেলে ৩০ হাজার টাকার স্বাস্থ্যবিমা করাতে হবে। ওই টাকা জমা দিতে হবে অন্য একটি সংস্থার নামে।

বাবলু জানিয়ে দেন, শ্বশুরমশাই টাকা দিতে রাজি নন। অভিযোগ, এরপরেই চক্রের লোকজন বাবলুকে জানায়, তাদের জায়গা পছন্দ হয়ে গিয়েছে। এখন টাওয়ার বসাতে না পারলে সমস্যা। বাবলু তখন নিজের বাড়ির ছাদে টাওয়ার বসানোর কথা বলেন। বাবলু ২৮ হাজার টাকা দেন বিমা করানোর নামে।

বাবলু পুলিশকে জানিয়েছেন, এরপরে তাঁর থেকে স্বাস্থ্যবিমা, চুক্তি, জমির বিমা বাবদ পর্যায়ক্রমে প্রায় ২ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়। টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় বাবলু আরও টাকা দিতে থাকেন। ধারদেনাও হয়ে যায়।

এক সময়ে তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। বিষয়টি তিনি বনগাঁ থানায় জানান। পুলিশ পরামর্শ দেয়, চক্রের লোকজনের সঙ্গে তিনি যেন স্বাভাবিক ভাবে কথা চালিয়ে যান।

এ দিকে, তদন্তকারীদের একটি দল তৈরি করা হয়। যে মোবাইল থেকে বাবলুর কাছে ফোন এসেছিল, সেই নম্বরগুলে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে পুলিশ।

এর মধ্যে বাবলুকে চক্রের লোকজন জানায়, আরও ১ লক্ষ টাকা লাগবে জমির বিমা করানোর জন্য। পুলিশের পরামর্শ মতোই বাবলু জানান, টাকাটা তিনি সামনাসামনি দিতে চান।

শুক্রবার ছিল সেই টাকা দেওয়ার দিন। বাবলু ফোনে জানান, অসুস্থ থাকায় যেতে পারছেন না। টাকাটা তিনি পরিচিত একজনকে দিয়ে পাঠাচ্ছেন। সেই মতোই শুক্রবার বনগাঁ থানার অফিসার চৈতন্য মণ্ডল বাবলুর পরিচিত সেজে বারাসতে যান। সঙ্গে ছিলেন সাদা পোশাকের আরও পুলিশ কর্মী।

টাকা নিতে এসে পুলিশের হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় ওই চারজন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বনগাঁ শহরের আরও এক ব্যক্তি ওই চক্রের খপ্পরে পড়ে ইতিমধ্যেই বহু টাকা খুইয়েছেন।

আইসি সতীনাথ চট্টরাজ বলেন, ‘‘চক্রের জাল বহু দূর ছড়িয়েছে। ধৃতদের জেরা করে অন্যদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।’’

Fraud Tower installation Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy