E-Paper

লন্ডনে আমির, জামাত কি তারেককে আটকাতে চাইছে

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করছে, বিএনপি-র সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ার পর যথেষ্ট দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে জামাত শিবিরে। তারেক যে শেষপর্যন্ত বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এটা হিসাবের মধ্যে ছিল না কারণ খালেদা জিয়ার পুত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিলেন, ফিরে আসাটা তাঁর হাতে নেই।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:২৯

— প্রতীকী চিত্র।

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের হঠাৎ লন্ডন সফর নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। যখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে, তার মাত্র এক সপ্তাহ আগে জামাতের আমিরের এই সফর কেন? যদিও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ব্রিটেনের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ও কর্মসূচিতে অংশ নিতেই এই সফর। দলের অন্যতম সহকারী সাধারণ সচিব এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকের নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় লন্ডন গিয়েছেন জামাতের আমির।

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করছে, বিএনপি-র সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ার পর যথেষ্ট দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে জামাত শিবিরে। তারেক যে শেষপর্যন্ত বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এটা হিসাবের মধ্যে ছিল না কারণ খালেদা জিয়ার পুত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই জানিয়েছিলেন, ফিরে আসাটা তাঁর হাতে নেই। কয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতির এমন কী বদল ঘটল যে তিনি ফিরতে পারছেন? এর কোনও উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, আমেরিকার এখানে বড় ভূমিকা থাকতেও পারে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমেরিকার কর্মসূচি বাস্তবায়িত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকলে তারেকের ফেরার পিছনে ওয়াশিংটনের ভূমিকা থাকা সম্ভব। জামাত এটাও জানে, তারেক ফিরলে বিএনপি দ্বিগুণ চাঙ্গা হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে তাঁর প্রত্যাবর্তন আটকাতে ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে শেষ চেষ্টা করবেন কি না শফিকুর, সেইপ্রশ্নও উঠছে।

আওয়ামী লীগ যেহেতু ভোটে যোগ দিতে পারছে না, ফলে ভোটে লড়াইটা সরাসরি হবে বিএনপি-র সঙ্গে জামাতের মধ্যে। এটা মনে করা হচ্ছে এনসিপি-কে কাজে লাগানো হচ্ছে হিংসা ছড়ানোর কাজে। পিছনে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থাআইএসআই রয়েছে বলেই অনুমান। সূত্রের খবর, আইএসআই জামাতকে নির্বাচনের মুখ করে মূলস্রোতের রাজনৈতিক দল হিসেবে সামনে রেখে, এনসিপি-কে সামাজিক মৌলবাদ, হিংসা ও দুর্বৃত্তায়ন ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করতে চাইছে।

মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তান অস্থির হয়ে উঠেছে কারণ বিএনপি নেতৃত্ব নয়াদিল্লির সঙ্গে সংযোগ শুরু করেছেন। তারা যে বহুত্ববাদ, সংখ্যালঘুকে সঙ্গে নেওয়া, আওয়ামী সমর্থকদের পাশে পাওয়ার রাজনীতি করছে তা ভারতের জন্য মাপসই হলেও ইসলামাবাদের অস্বস্তির কারণ। তারা জিতে ক্ষমতায় এলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশে পাকিস্তানের প্রভাব কমতে পারে যা গত এক বছরে তৈরিকরা হয়েছিল।

শেখ হাসিনার আমলে আইএসআই-এর সক্রিয়তার জায়গা ছিল না বাংলাদেশে। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসার পরে মুহাম্মদ ইউনূসের আমলে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে আইএসআই। প্রসঙ্গত, এর আগের বিএনপি সরকারের সময় ভারতের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয়েছিল। কারণ ভারতের উত্তর-পূর্বের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে বাংলাদেশ সরকার সে সময়ে নিজের মাটিতে পালন করেছে বলে অভিযোগ ছিল সাউথ ব্লকের। ভারতকে চাপে রাখার জন্যপাকিস্তান সে সময় বিএনপি-কে দিয়ে তা করাতে পেরেছিল— এমনটাই নয়াদিল্লির বক্তব্য। এখন তারেক এবং বিএনপি বরং ভারতের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে চাইছে বলেইখবর। ভারত-বিরোধী ঘৃণার ভাষ্য তৈরি করতে চাওয়া পাকিস্তানতাই চাইছে যাতে সাধারণ মানুষ নির্বাচনের সময় বিএনপি-র দিকে না গিয়ে জামায়াতে ইসলামীরদিকে ঝোঁকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh Situation Bangladesh Jamaat-e-Islami

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy