মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাষিদের কাছ থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উৎপল সিংহ নামে ওই ব্যক্তিকে হাবড়া থেকে ধরা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বাড়ি হাবড়ার বাণীপুর এলাকায়। বুধবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে উৎপল বাঁশঘাটা এলাকার পাঁচজন কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নিজেকে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী বলে পরিচয় দেয়। বোরো চাষে জলসেচের জন্য পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ সে পাইয়ে দেবে বলে চাষিদের প্রতিশ্রুতি দেয়। সে জন্য পাঁচজন কৃষকের কাছ থেকে একাশি হাজার টাকাও নেয় সে। কয়েকদিন পর তাঁদের বাগদা বিদ্যুৎ দফতরে যোগোযোগ করতে বলে। পরে ওই কৃষকরা বাগদা বিদ্যুৎ দফতরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে তাঁদের নামে কোনও টাকা বা কাগজপত্র জমা পড়েনি। বিদ্যুৎ দফতর থেকে কৃষকদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে ওই নামে তাঁদের কোনও কর্মী নেই।
বাগদার বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজারের কাছে বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতি (অল বেঙ্গল ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন-র) সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছিল উৎপল। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে কৃষকরা তখন বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতিতে বিষয়টি জানান। বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতি থেকে লিখিত ভাবে বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে উৎপল সিংহ নামে কোনও সদস্য নেই।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরের পর উৎপলকে বাগদা বিদ্যুৎ দফতরের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সদস্যরা। তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় ও পাঁচজন কৃষকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে তাকে গ্রেফতার করে।
বিদ্যুৎ দফতরের লোকজন তাকে আগেও চিনত। কারণ এই অভিযোগ আগেও উৎপলের বিরুদ্ধে ছিল।
প্রতারিত কৃষক জামিরুল মণ্ডল, আকবর ধাবক, মঙ্গল প্রামাণিক, হাজারি প্রমাণিক, সাহজাহান মণ্ডলরা বলেন, ‘‘ও নিজেকে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিল। কথাবার্তা শুনে কোনও সন্দেহ হয়নি। তাই টাকা দিয়েছিলাম।’’
বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সম্পাদক সুকুমার মজুমদার বলেন, ‘‘ও একজন জালিয়াত। গোপালনগর, হাবড়ার বিভিন্ন এলাকাতে প্রতারণা করে বেড়ায়। বছর দু’য়েক আগে বাগদাতেই কয়েকজন চাষির কাছ থেকে একই ভাবে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। সে বার পালিয়ে গিয়েছিল, এ বার ধরা পড়ল।’’