দিনটা এখনও ভুলতে পারেন না গাইঘাটার ঠাকুরনগরের তরুণী।
বাজার সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারির ঘটনা। শীতের সন্ধ্যা। তরুণীর পথ আটকায় দুই যুবক। তাঁকে মোটরবাইকে তুলে নিয়ে যায় নির্জন জায়গায়। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিল আরও এক জন। তিন জন মিলে তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
ধরা পড়ে অভিযুক্তেরা। জামিনে ছাড়াও পেয়ে যায়। এখনও বনগাঁ আদালতে চলছে গণধর্ষণের সেই মামলা। তিনটে বছর কেটে গিয়েছে মাঝে। ভয়ঙ্কর অতীত ভুলে এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান তরুণী। মাধ্যমিক দিয়েছেন এই মানসিক পরিস্থিতিতে। আজ, বুধবার বসবেন উচ্চ মাধ্যমিকে।
তরুণীর কথায়, ‘‘যখন একা থাকি, তখনই পুরনো কথা মনে পড়ে যায়। কিন্তু কবে বিচার পাব, সেই জেদও চেপে বসে।’’
কী ভাবে পেলেন এই মানসিক শক্তি?
তরুণী বলেন, ‘‘ঘটনাটি যখন ঘটেছিল, তখন গাইঘাটা থানার ওসি ছিলেন অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। তিনি আমাকে স্বামীজির জীবনী পড়তে দিয়েছিলেন। সেই বই পড়েই নতুন করে লড়াই করার মানসিক শক্তি পেয়েছিলাম।’’
তরুণীর বাবা চাষি। টিনের চালের ঘরে দৈনন্দিন দিনযাপন। গণধর্ষণের পরে ঘটনার প্রতিবাদে তোলপাড় হয় রাজ্যে। বাড়িতে আসেন মন্ত্রী, সাংসদেরা।
কিছু দিন পরে অবশ্য সব শান্ত। একারই লড়াইয়ের শুরু। পরীক্ষায় পাস করে কলেজে ভর্তি হতে চান তিনি। সাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দু’চোখে। তরুণী যে স্কুলে পড়াশোনা করেছেন, সেখানকার সহকারী প্রধান শিক্ষক অলোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘মেয়েটির ইচ্ছা শক্তি প্রবল। তা না হলে ওই ঘটনার পরে নতুন করে ফিরে আসা কঠিন ছিল।’’
তরুণীর আশঙ্কা, ফের হামলা হতে পারে। তাঁর নিরাপত্তায় বাড়ির সামনে পাহারায় থাকে সিভিক ভলান্টিয়ার্স। গাইঘাটা থানার পক্ষ থেকে তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্রে দিয়ে আসা ও নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবু আতঙ্ক থেকেই যায়।
তবু চলে লড়াই। ফিরে আসার, ঘুরে দাঁড়ানোর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy