‘মিডলম্যান’ ধরা পড়ছে। কিন্তু মাথাদের ছোঁয়া যাচ্ছে না।
জুতোর নীচে, ব্যাগের ভেতর এমনকী শরীরের ভিতরে ঢুকিয়ে চলছে সোনা পাচার। অভিযোগ, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে ‘সেফ করিডর’ হিসেবে বেছে নিচ্ছে পাচারকারীরা। ঢাকার গুলশন-কাণ্ডের পরে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও সোনা পাচার কমেনি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস কয়েকের মধ্যে বনগাঁ এবং বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচারের অভিযোগে ধরা পড়েছে কয়েক জন। পেট্রাপোল বন্দর ও সংলগ্ন এলাকা থেকে শুল্ক অভিবাসন দফতর ও বিএসএফ আটক করেছে সোনার বিস্কুট। কিন্তু সোনা-সহ যারা ধরা পড়েছে তারা সবাই ‘মিডলম্যান’। সঠিক ঠিকানায় সোনা পৌঁছে দেওয়াই তাদের কাজ। ধৃতদের জেরা করে পাচারচক্র সম্পর্কে তেমন তথ্যও পাওয়া যায়নি।
কিছু দিন আগে পেট্রাপোল বন্দর এলাকা থেকে ১২টি সোনার বিস্কুট-সহ এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দফতরের অপরাধ দমন শাখা। শুল্ক দফতরের এক কর্তা জানান, ওই বাংলাদেশিকে তল্লাশি করে প্রথমে কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় তাকে শৌচাগারে নিয়ে সারা শরীরে তল্লাশি চালানো হয়। তখন পায়ু ছিদ্র থেকে সোনার বিস্কুটগুলি উদ্ধার হয়। তারপর জেরায় ধৃত জানায়, বাংলাদেশে এক ব্যক্তি তাকে সোনার বিস্কুটগুলি দিয়েছিল। সেগুলি নেওয়ার জন্য পেট্রাপোল বন্দরে অপেক্ষা করছিল অন্য রিসিভার। কিন্তু ধৃতের দাবি, সে কাউকেই আগে দেখেনি। সম্প্রতি অশোকনগর থানার পুলিশ প্রায় এক কেজি সোনা-সহ কয়েক জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও ধৃতদের জেরা করে পাচার চক্রের মাথাদের বিষয়ে তেমন কিছুই জানতে পারেনি পুলিশ। কারণ, ধৃতেরা ছিল ‘মিডলম্যান’।
পেট্রাপোল স্থল বন্দরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সীমান্ত দিয়ে যে পরিমাণ সোনা পাচার হয় তার সামান্য অংশই ধরা পড়ে। আর যাদের ধরা হয় তারা প্রায় সবাই চুনোপুঁটি। মাথাদের ধরতে না পারা পর্যন্ত এই পাচার বন্ধ করা খুব মুশকিল।’’ ওই কর্তার অভিযোগ, সোনা উদ্ধারের জন্য পুলিশের থেকে পুরো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের সাফাই, চোরাই উদ্ধার করে থানায় জমা দেওয়ার পরে অনেক জবাবদিহি করতে হয়। তাই তল্লাশিতে তেমন জোর দেন না পুলিশকর্মীরা।
যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সোনা পাচার বন্ধে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। বিএসএফ এবং শুল্ক দফতরের কর্তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নিয়মিত তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy