Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্লাসের মধ্যেই ভেঙে পড়ল ছাদের চাঙড়

খবর পেয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত, প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের কর্তারা চলে আসেন। তাঁরা সকলের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেন।

ভাঙাচোরা: স্কুলের অবস্থা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

ভাঙাচোরা: স্কুলের অবস্থা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৮
Share: Save:

ক্লাস চলাকালীন ছাদ থেকে ভেঙে পড়ল চাঙড়। কেউ চোট পায়নি ঠিকই। কিন্তু আতঙ্কে কাঁদতে শুরু করে অনেক পড়়ুয়া। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ভয় পেয়ে যান শিক্ষকেরাও। খবর যায় অভিভাবকদের কাছে। তাঁরা চলে আসেন স্কুলে। ঘটনার প্রতিবাদে পাঁচ জন শিক্ষককে আটকে রাখা হয় স্কুলে।

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগরের গরিবপুর এফপি স্কুলে। অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষজন ঘটনার পরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পড়ুয়াদের ক্ষতি হয়ে গেলে তার দায় কে নেবে, সে প্রশ্ন তোলা হয়। স্কুলের পরিকাঠামোর এমন দশা কেন, তা নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়।

খবর পেয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত, প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের কর্তারা চলে আসেন। তাঁরা সকলের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেন। কয়েক ঘণ্টা পরে ঘেরাও-মুক্ত শিক্ষকেরা। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, এর আগেও ওই স্কুলে ছাদ থেকে চাঙড় ভেঙে পড়েছে। গত বছরও একই ভাবে ক্লাস চলাকালীন চাঙড় খসে পড়ে। সে বারও অল্পের জন্য রক্ষা পায় সকলে। স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য, গত বছর দুর্ঘটনার পরেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, স্কুলের পরিকাঠামো সংস্কার করা হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। যে কোনও সময়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠায়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না অভিভাবকেরা। সঙ্গীতা রায় নামে এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে যদি এ ভাবে আতঙ্কে থাকতে হয়, তা হলে তো খুব সমস্যা। সামনে স্কুলের পরীক্ষা। যদি ঘরদোর সারানো না হয়, তা হলে পরীক্ষা দিতেও পাঠাব না সন্তানদের।’’

তৃতীয় শ্রেণির কয়েক জন পড়ুয়ার কথায়, ‘‘আমরা তখন ক্লাসে বসে পড়ছি। হঠাৎ শুনি হুড়মুড় করে করে শব্দ। পিছন ফিরে দেখি, ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়েছে। ধুলোয় ঢেকে গেল ক্লাস। অনেকে কান্নাকাটি শুরু করে। আমরা দৌড়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যাই।’’ এমন পরিস্থিতিতে তারা স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে বলে জানিয়েছে্ বহু পড়ুয়া।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পরমহংস মালাকার বলেন, ‘‘ওই ভবনটি দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল। তিনটি শ্রেণির ক্লাস চলে ওখানে। আমাদেরও ক্লাস নিতে ভয় ভয় করে। শিক্ষা দফতর ও ব্লক প্রশাসনকে অনেক দিন আগেই সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’’

বনগাঁর বিডিও সঞ্জয়কুমার গুছাইত বলেন, ‘‘গত বছরও চাঙড় ভেঙে পড়েছিল। জেলা প্রশাসনে কাছে বিএডিপি (বর্ডার এরিয়া ডেভলেপমেন্ট প্রোজেক্ট) প্রকল্পের টাকা চাওয়া হয়েছে। টাকা এলেই ওখানে নতুন ভবন করে দেওয়া হবে।’’ শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে আপাতত অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিয়ে পঠনপাঠন চালানো যায় কিনা, তা দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিডিও।

কিন্তু তত দিন কী এ ভাবেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করবে ছেলেমেয়েরা স্কুলের দাবি, অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gopalnagar Roof School Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE