(বাঁ দিকে) নিহত ইমরান হোসেনের বাবা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় বোমার আঘাতে মৃত কিশোরের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মৃত ইমরান হোসেনের বাবা ইন্দাদুল হোসেন জানান, সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। পরে তিনি ঘটনাস্থলে আসতে পারেন বলেও জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েত ভোটের দোরগোড়ায় উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানা এলাকা। মঙ্গলবার দেগঙ্গার একাধিক এলাকায় তৃণমূল এবং আইএসএফের সংঘর্ষ হয়। তাতে আহত হন প্রায় ১৫ জন। রাতেই বোমার আঘাতে এক তৃণমূল কর্মীর ছেলের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সিপিএম এবং আইএসএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। স্থানীয় সূত্রে খবর, দেগঙ্গার শোয়াইসেতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙার্টি গ্রামে মিছিল করে যাচ্ছিলেন তৃণমূল সমর্থকেরা। অভিযোগ, সেই মিছিলকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন ১৭ বছরের তরুণ ইমরান। একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় ভর্তি করানো হয় দেগঙ্গা ব্লকের বিশ্বনাথপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতের কাকা মহম্মদ আরসাদুল হক নিজেকে দীর্ঘ দিনের তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, “আমরা মিছিল করে যাচ্ছিলাম। আমার ভাইপো ইমরান হোসেনও আমাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। মিছিলে হঠাৎই বোমা ছোড়ে সিপিএম, আইএসএফ-এর লোকেরা।” প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাইব প্রশাসন যেন দোষীদের উপযুক্ত সাজা দেয়।”
বুধবার সকালে নিহত নাবালকের বাবাকে ফোন করেন রাজ্যপাল বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, কয়েক মিনিট ইন্দাদুলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মৃতের বাবার কাছে রাজ্যপাল জানতে চান, ঠিক কী ঘটেছে। পুলিশ প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেছে কি না জানতে চান তিনি। ছেলেহারা ইন্দাদুলের কথায়, ‘‘আমার ছেলের সম্পর্কে জানতে চাইলেন উনি (রাজ্যপাল)। ছেলে কী করত, কোন ক্লাসে পড়াশোনা করত, এ সব জানতে চান। কোনও অসুবিধা থাকলে তাঁকে জানতে বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, সেটা পরেও জানালেও হবে।’’ ইন্দাদুল জানাচ্ছেন, রাজ্যপাল তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন। যদি কোনও প্রয়োজন হয় সেটাও জানতে চেয়েছেন। তেমন কোনও পরিস্থিতি হলে, তিনি নিজেও আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন। ওই তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘তবে আমি কিছু চাইনি। কারও সঙ্গে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই আমি।’’ ঘটনার আকস্মিকতায় শোকস্তব্ধ ইন্দাদুল বলেন, ‘‘আমাদের শান্তিপূর্ণ এলাকা। আগে টিভিতে দেখতাম এই সব গন্ডগোলের ঘটনা। ওই রকম পরিস্থিতি যে এখানে হবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।’’
অন্য দিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বোমার আঘাতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy