প্রতীকী ছবি।
ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা। চোখের আন্দাজে ভেসেল চালাতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে কাকদ্বীপ-সাগর ফেরি পরিষেবা। ‘মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট’ বা আন্তর্জাতিক জলপথ পরিবহণের বিধি অনুযায়ী, ভেসেলে জিপিএস বসানোর কথা। উপগ্রহ চিত্রের উপরে ভরসা না রেখে ভেসেল চললে বিপদ। যে কোনও সময়ে চড়ায় আটকে যেতে পারে ভেসেল। অন্য দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে।
কিন্তু সাগরে সে সবের বালাই নেই। কারণ, থ্রি-জি পরিষেবার অভাবে ইন্টারনেট ব্যবস্থাই খুব দুর্বল প্রত্যন্ত এলাকায়। জিপিএস ব্যবহারের সুযোগই নেই। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘এই ফেরি পথে জিপিএস বসানো অত্যন্ত জরুরি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। খুব শীঘ্রই বিষয়টি রাজ্য স্তরের বৈঠকে তুলে ধরব। মুখ্যমন্ত্রীকেও লিখিত ভাবে জানাব।’’
পরিবহণ দফতরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘ফেরিগুলিতে জিপিএস লাগানো আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ওই এলাকায় থ্রি-জি নেটওয়ার্ক খুব খারাপ বলে তা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের সফ্টওয়্যার তৈরি রয়েছে।’’
এ দিকে, এগিয়ে আসছে গঙ্গাসাগর মেলা। কিন্তু মুড়িগঙ্গায় রোজই থাকছে কুয়াশা। তাতে ক্রমাগতই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া পর্যন্ত ফেরি পরিষেবা। ওই পথে রোজ গড়ে প্রায় ৬ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। মঙ্গলবার কুয়াশার জন্য প্রায় ৭ ঘণ্টা চরে আটকে ছিল একটি বড় ভেসেল। বুধবারও ওই একই কারণে দু’টি ভেসেল প্রায় ৫ ঘণ্টা আটকে পড়ে। পরে জোয়ার এলে, কুয়াশা কাটলে সেগুলি চালু হয়।
ফেরি পরিষেবায় যুক্ত অস্থায়ী ভেসেল কর্মীদের ইউনিয়ন বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। সংগঠনের নেতা শক্তি মাইতির দাবি, জিপিএস না বসালে এ ভাবে পরিষেবা চালানো সম্ভব নয়। সাগরের কচুবেড়িয়ায় পরিবহণ দফতরের জুনিয়র ট্রান্সপোর্ট অফিসারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তাঁরা। শক্তিবাবুর কথায়, ‘‘লট ৮ ঘাট থেকে চরার জন্য চালকদের অনেক আঁকাবাঁকা পথে যেতে হয়ে ভেসেল নিয়ে। চ্যানেল মার্কিংও করা নেই। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’
দীর্ঘ দিন ধরে চালকদের চোখের আন্দাজই ভরসা। অথচ, মুড়িগঙ্গায় ক্রমাগত চরা পড়ে গিয়ে ভেসেল চলার পথ সরু হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে বাড়তি সমস্যা কুয়াশা। ভেসেল চলাচলের পথেই সেই পথে কাকদ্বীপ থেকে সাগর পর্যন্ত টানা হাই টেনশন বিদ্যুতের খুঁটিও বসানো। এ রকম ভাবে কয়েক হাজার মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রোজ যাত্রী
পারাপার চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy