E-Paper

নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিল সন্দেশখালির ছেলেমেয়েরা

রাধারানি হাই স্কুলের ৪৯ জন ছাত্র ও ৭৯ জন ছাত্রী এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বসেছে। শুরুর আগে এক রাশ উদ্বেগ ছিল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে।

নবেন্দু ঘোষ 

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৮
সন্দেশখালি খেয়াঘাটে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। শুক্রবার।

সন্দেশখালি খেয়াঘাটে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।

সন্দেশখালির আঁচ ছড়িয়েছে গোটা দেশে। রাজ্যপাল ঘুরে গিয়েছেন। কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল, বিরোধীরা নিয়মিত সন্দেশখালি যেতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। পুলিশের রুটমার্চ চলছে। ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বহু জায়গায়। ধুন্ধুমার হচ্ছে সুন্দরবনের এই দ্বীপ এলাকায় মহিলাদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে। তারই মধ্যে কেটেছে মাধ্যমিক। শুক্রবার উচ্চ মাধ্যমিকে বসল সন্দেশখালির ছেলেমেয়েরা।

রাধারানি হাই স্কুলের ৪৯ জন ছাত্র ও ৭৯ জন ছাত্রী এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বসেছে। শুরুর আগে এক রাশ উদ্বেগ ছিল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। অধিকাংশ অভিভাবক পরীক্ষার্থীদের নিয়ে জেলিয়াখালি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের পরীক্ষা কেন্দ্রে যান। রাধারানি হাই স্কুলের ছাত্র সুদীপ দাসের বাড়ি স্থানীয় পুকুর পাড়ায়। এখােই তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরার মুরগি ও ছাগলের খামার ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ক’দিন আগে। এই এলাকার মহিলারাই প্রতিবাদ আন্দোলনে প্রথম সারির মুখ। এলাকায় পুলিশি নজরদারি তাই পুরোমাত্রায় আছে। সুদীপ বলে, ‘‘লেখাপড়া মাথায় উঠেছিল ক’দিন ধরে। গৃহশিক্ষকের কাছে যেতে পারিনি। ইন্টারনেট বন্ধ। প্রস্তুতি নিতে পারিনি ঠিক করে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পুলিশ টোটো নিয়ে প্রচার করেছে, আমরা যেন পরীক্ষা দিতে যাই। ভয় না পাই। পরীক্ষা কেন্দ্রে দিদিমা এসেছিলেন, একা ছাড়লেন না।’’ সুদীপের দিদা মায়ারানি বলেন, ‘‘এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছিল। আগুন জ্বলল। কাকে কখন পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। এই অবস্থায় কী করে ছেলেটাকে একা ছাড়ি!’’ প্রথম দিন যাতায়াতে কোনও অসুবিধা হয়নি বলে জানালেন অনেক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। অয়ন্তিকা সরকার, দোলন মণ্ডলেরা বলে, ‘‘গৃহশিক্ষক সন্দেশখালির ত্রিমণীতে পড়াতেন। ৭ ফেব্রুয়ারি অশান্তির পরে আর আসেননি। পরীক্ষাকেন্দ্রে মা সঙ্গে গিয়েছেন।’’

যে সব পরীক্ষার্থীরা সন্দেশখালি দ্বীপে পরীক্ষা দিতে এল, তারাও উদ্বেগে ছিল। তবে পুলিশ সর্বত্র মোতায়েন থাকায় কোনও সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতর। উদ্বেগ কিছুটা হলেও কমেছে বলে প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে জানিয়েছেন অনেকে। রিঙ্কি করণ সন্দেশখালির আতাপুর কেনারাম হাই স্কুলের পরীক্ষার্থী। তার কথায়, ‘‘রাধারানি হাই স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসতে ভয় লাগছিল। গত কয়েক দিন যা সব ঘটেছে! তবে প্রথম দিন এসে ভয় কেটেছে।’’

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্দেশখালিতে নির্বিঘ্নে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে পরীক্ষার্থীরা। এক হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আছেন পদস্থ আধিকারিকেরা। কোনও রকম অশান্তি হলে সঙ্গে সঙ্গে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sandeshkhali HS Exam

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy