বাড়িতে ডাকাতির ভুয়ো গল্প ফাঁদায় অভিযুক্ত মঞ্জু। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নভেম্বর মাসে উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে লুট হয়েছিল লক্ষাধিক টাকার সোনায় গয়না এবং নগদ। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানাল, গোটাটাই ভুয়ো। ডাকাতির কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ওই বাড়ির গৃহবধূই ওই পরিকল্পনা কষেছিলেন।
গত ১০ নভেম্বর আগরপাড়ার সাউথ স্টেশন রোডে ব্যবসায়ী দিগম্বর সিংহের বাড়িতে ডাকাতি হয় বলে জানা গিয়েছিল। সেই সময় দিগম্বর স্ত্রী মঞ্জুকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিলেন ছটের কেনাকাটা করতে। বাড়িতে একাই ছিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষম মেয়ে। বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁকে চেয়ারে বেঁধে রেখে অবাধে লুটপাট চালানো হয় ব্যবসায়ীর বাড়িতে। পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া অভিযোগে জানানো হয়, খোয়া গিয়েছে মঞ্জুর লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না এবং নগদ।
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। কিন্তু তদন্ত কিছু দূর এগোতেই সন্দেহ তৈরি হয় পুলিশকর্তাদের মনে। তাঁদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে দিগম্বরের স্ত্রী মঞ্জুর উপর। বৃহস্পতিবার পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক করে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অলক রাজোরিয়া জানান, মঞ্জু আর্থিক সমস্যায় পড়েছিলেন। তাই নিজের গয়না অন্যত্র বন্ধক দিয়ে টাকা জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু টাকা দিয়ে আর সেই গয়না ছাড়াতে পারেননি। এ দিকে ছটপুজো আসছে। স্বামী মঞ্জুকে সোনার গয়না পরার জন্য বায়না করবেন, অভিজ্ঞতা থেকে তা বুঝতে পেরেছিলেন মঞ্জু। তাই পরিকল্পনা করেন তিনি। ঠিক করেন, ডাকাতির ভুয়ো গল্প ফাঁদবেন। বলবেন, ডাকাতরা সমস্ত গয়নাগাঁটি নিয়ে গিয়েছে। স্বামীও তাঁকে আর সোনার গয়না পরতে বলবেন না। তা হলেই সাপও মরবে, আবার লাঠিও আস্ত থাকবে! কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে পড়ল মঞ্জুর কীর্তি।
অলক জানিয়েছেন, মঞ্জুকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি। পুলিশের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে মঞ্জুর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগের মামলা হতে পারে। গোটা বিষয়টিই আদালতের উপর ছাড়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy