যাকে নিয়ে মানুষের এত কৌতুহল, এক মুখ খোঁচা খোঁচা দাড়িতে তার অবশ্য বিশেষ হেলদোল চোখে পড়েনি। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘খুন-জখমের গল্প পড়ে পড়ে, ভিডিও দেখতে দেখতে ওর ভিতরে অপরাধী সত্ত্বাটা চেপে বসেছে। সচরাচর প্রথমবার কেউ এমন অপরাধ করলে ঘটনাস্থলে আনলে ভেঙে পড়ে। কিন্তু ওর কোনও ভাবান্তর চোখে পড়ল না।’’
অসীম পুলিশকে জানিয়েছে, ২৯ জুলাই রাতে সাতবেড়িয়া স্টেশনে অসীমকান্তিবাবুকে নিয়ে পৌঁছয় সে। পরে গ্রামের পথ ধরে। সন্ধের পরে ওই রাস্তায় বিশেষ কেউ যাতায়াত করে না। দু’পাশে পাটখেত। কোথাও কোথাও জলাজমির মধ্যে দিয়ে একফালি রাস্তা। সূর্য ডুবলে গোটা এলাকাটা অন্ধকারে ঢেকে যায়। অসীম জানায়, ঘটনার দিন রাত ১০টা নাগাদ ওই পথে অসীমকান্তিবাবু হাঁটছিলেন আগে। তিনি মোবাইল ফোন জ্বেলে রাখায় সামান্য আলো হচ্ছিল। তাঁর কাঁধের ব্যাগে ছিল দামী ক্যামেরাটা। যার লোভেই খুন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অসীমকান্তিবাবুর পিছনে ক্যামেরার স্ট্যান্ড হাতে হাঁটছিল অসীম। খুনের পরে ক্যামেরার স্ট্যান্ড ও অসীমকান্তির মোবাইল সে ভেঙে ফেলে দেয়। খুনের দিন বিকেলে এসে পথটি ‘রেকি’ করে গিয়েছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছে ওই যুবক।
কিন্তু অসীমকে এত ভরসা করে রাতবিরেতে অচেনা জায়গায় কেন পৌঁছলেন অসীমকান্তি?পুলিশ জানতে পেরেছে, এক বাংলাদেশি প্রযোজকের সঙ্গে তাঁর দেখা করিয়ে দেবে বলেছিল অসীম। ওই প্রযোজক নাকি চোরাচালানে যুক্ত। তাঁর প্রচুর কাঁচা টাকা। যা তিনি সিনেমায় ঢালতে রাজি বলে দাবি করে অসীম। এমনিতে বিএসএনএলের ওই কর্তার টাকা-পয়সা কম নয়। পুলিশ জানায়, কলকাতায় তাঁর আটটি বাড়ি। বেনামে জমি-বাড়ি কেনার ব্যবসাও করতেন অসীমকান্তি। শ্রমিক সরবরাহের কারবারও ছিল বলে জানতে পারেছে পুলিশ।