Advertisement
E-Paper

এখানেই ছুরি চালিয়েছিলাম, বলল অসীম

সাতবেড়িয়া স্টেশন এলাকায় কয়েকশো মানুষ এ দিন ভিড় করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকে এক বৃদ্ধা বলে উঠলেন, ‘‘এইটুকু রোগা পাতলা বাচ্চা ছেলেটা এমন ভাবে কাউকে খুন করতে পারে? ওকে নিজের চোখে দেখেও তো বিশ্বাস হচ্ছে না!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০১:১৪
অকুস্থলে: অসীমকে নিয়ে তদন্তে পুলিশ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

অকুস্থলে: অসীমকে নিয়ে তদন্তে পুলিশ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

গ্রামের বাইরে দিয়ে সরু মেঠো পথে হাঁটছিল ছেলেটা। হঠাৎ থেমে গেল। আঙুল দিয়ে একটা জায়গা দেখিয়ে বলে উঠল, ‘‘এখানেই ছুরি চালিয়েছিলাম।’’

এলাকাটা সাতবেড়িয়া স্টেশনের কাছাকাছি। অভিযোগ, ২৯ জুলাই এখানেই অসীমকান্তি পালকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে খুন করেছিল অসীম সরকার। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ৩টে নাগাদ বছর চব্বিশের যুবক অসীম পালকে নিয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। সঙ্গে ছিলেন বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়। বারমুডা, টি-শার্ট গায়ে অসীম দেখিয়ে দেয়, কোথায় দাঁড়িয়ে খুন করেছিল সে।

সাতবেড়িয়া স্টেশন এলাকায় কয়েকশো মানুষ এ দিন ভিড় করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকে এক বৃদ্ধা বলে উঠলেন, ‘‘এইটুকু রোগা পাতলা বাচ্চা ছেলেটা এমন ভাবে কাউকে খুন করতে পারে? ওকে নিজের চোখে দেখেও তো বিশ্বাস হচ্ছে না!’’

যাকে নিয়ে মানুষের এত কৌতুহল, এক মুখ খোঁচা খোঁচা দাড়িতে তার অবশ্য বিশেষ হেলদোল চোখে পড়েনি। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘খুন-জখমের গল্প পড়ে পড়ে, ভিডিও দেখতে দেখতে ওর ভিতরে অপরাধী সত্ত্বাটা চেপে বসেছে। সচরাচর প্রথমবার কেউ এমন অপরাধ করলে ঘটনাস্থলে আনলে ভেঙে পড়ে। কিন্তু ওর কোনও ভাবান্তর চোখে পড়ল না।’’

অসীম পুলিশকে জানিয়েছে, ২৯ জুলাই রাতে সাতবেড়িয়া স্টেশনে অসীমকান্তিবাবুকে নিয়ে পৌঁছয় সে। পরে গ্রামের পথ ধরে। সন্ধের পরে ওই রাস্তায় বিশেষ কেউ যাতায়াত করে না। দু’পাশে পাটখেত। কোথাও কোথাও জলাজমির মধ্যে দিয়ে একফালি রাস্তা। সূর্য ডুবলে গোটা এলাকাটা অন্ধকারে ঢেকে যায়। অসীম জানায়, ঘটনার দিন রাত ১০টা নাগাদ ওই পথে অসীমকান্তিবাবু হাঁটছিলেন আগে। তিনি মোবাইল ফোন জ্বেলে রাখায় সামান্য আলো হচ্ছিল। তাঁর কাঁধের ব্যাগে ছিল দামী ক্যামেরাটা। যার লোভেই খুন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অসীমকান্তিবাবুর পিছনে ক্যামেরার স্ট্যান্ড হাতে হাঁটছিল অসীম। খুনের পরে ক্যামেরার স্ট্যান্ড ও অসীমকান্তির মোবাইল সে ভেঙে ফেলে দেয়। খুনের দিন বিকেলে এসে পথটি ‘রেকি’ করে গিয়েছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছে ওই যুবক।

কিন্তু অসীমকে এত ভরসা করে রাতবিরেতে অচেনা জায়গায় কেন পৌঁছলেন অসীমকান্তি?পুলিশ জানতে পেরেছে, এক বাংলাদেশি প্রযোজকের সঙ্গে তাঁর দেখা করিয়ে দেবে বলেছিল অসীম। ওই প্রযোজক নাকি চোরাচালানে যুক্ত। তাঁর প্রচুর কাঁচা টাকা। যা তিনি সিনেমায় ঢালতে রাজি বলে দাবি করে অসীম। এমনিতে বিএসএনএলের ওই কর্তার টাকা-পয়সা কম নয়। পুলিশ জানায়, কলকাতায় তাঁর আটটি বাড়ি। বেনামে জমি-বাড়ি কেনার ব্যবসাও করতেন অসীমকান্তি। শ্রমিক সরবরাহের কারবারও ছিল বলে জানতে পারেছে পুলিশ।

Murder Case Murder Crime Asim Sarkar Police Investigation সাতবেড়িয়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy