Advertisement
E-Paper

বিয়ে করব না, স্কুলে গিয়ে বলল সুহিনা

ছাত্রীটির কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ব্যাসপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বরূপরাজ রায়চৌধুরী। তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী সুহিনা খাতুন তখন বার বার বলছে, ‘‘আমি এখন বিয়ে করতে চাই না।’’

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৬ ০৬:৩৮

ছাত্রীটির কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ব্যাসপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বরূপরাজ রায়চৌধুরী। তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী সুহিনা খাতুন তখন বার বার বলছে, ‘‘আমি এখন বিয়ে করতে চাই না।’’

গোপালনগর থানার ব্যাসপুর গ্রামের বাসিন্দা ছাত্রীর মুখে এ কথা শুনে প্রথমে খানিক থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন স্বরূপরাজবাবু। ‘কী হয়েছে?’ প্রশ্ন করার পরে বছর পনেরোর ওই ছাত্রী জানায়, পরিবারের লোকজন তার অনিচ্ছাতেই বিয়ের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সে পড়াশোনা করতে চায়। প্রধান শিক্ষকের কাছে বিয়ে বন্ধের আকুতি করে সে। শুত্রুবার প্রধান শিক্ষক গোপালনগর থানার ওসি লিটন রক্ষিতকে বিষয়য়টি জানান। সব জেনে ওই ছাত্রী এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। সোমবার তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘পুলিশ ওই বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। সোমবার যাতে আমাদের নজর এ়়ড়িয়ে বিয়ে না হয় সে জন্য পুলিশ নজর রাখছে।’’

সুহিনার বাবা আবদুল জবের আলি মণ্ডল পুলিশকে জানান, তাঁরা গরিব। মেয়ে যদি কোথাও পালিয়ে যায় সেই ভয়েই মেয়ের বিয়ের চেষ্টা করছেন তাঁরা। পুলিশ তাঁকে জানায়, ১৮ বছরের নীচে মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনের চোখে অপরাধ। তাই এই বিয়ে হলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে। এর পর সুহিনার বাবা-সহ তার পরিবারের লোকজন পুলিশকে লিখিত ভাবে জানান, ১৮ বছর বয়স না হলে তাঁরা মেয়ের বিয়ে দেবেন না। বিয়ের আয়োজন বাতিল করা হয়েছে।

সুহিনার প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘ওই কিশোরীর থেকে সব শুনে স্কুলের এক শিক্ষিকাকে ওদের বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনও কথা শুনতে চাননি। তার পর বিষয়টি পুলিশে জানাই।’’

গোপালনগর থানার এক পুলিশ অফিসার জানান, এরপর যদি ফের বিয়ের চেষ্টা হয় তা হলে ওই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

দিনের শেষে সুহিনার কথা শুনে অনেকেরই মনে পড়েছে নাবালিকা বিয়ে রোখার আইকন রেখা কালিন্দী-বীণা কালিন্দী-আফসানা খাতুনের কথা। মাস কয়েক আগেই নিজের বিয়ের কার্ড নিয়ে পুলিশের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল বীরভূমের বোলপুরের সিঙ্গি পঞ্চায়েতের বড়ডিহা গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্রী আলোকলতা মাজি। এ বার পথ দেখাল সুহিনা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি লেখাপড়া করতে চাই। পুলিশ ও স্কুল আমার পাশে দাঁড়ানোয় আমি খুশি।’’

চাইল্ড লাইনের বনগাঁ মহকুমার কো-অর্ডিনেটর স্বপ্না মণ্ডল বলেন, ‘‘এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। আমরা ওই মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে আমরা মেয়েটির কাউন্সেলিং করাব।’’

Child marriage student Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy