Advertisement
E-Paper

বনগাঁয় বাড়ছে চুরি, নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন

সন্ধে ৭টা নাগাদ সমতা বাড়ি ফিরে দেখেন, ঘরের তালা ভাঙা। ঘরের সামনে ও পিছনের দরজার তালা ভেঙে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। আলমারি ও শোকেস ভেঙে সোনা ও রূপোর গয়না চুরি করে নিয়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৩২
উদ্বোধন: পুলিশ সুপারের নতুন অফিস চালু বনগাঁয়। ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

উদ্বোধন: পুলিশ সুপারের নতুন অফিস চালু বনগাঁয়। ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

ফের জোড়া চুরির ঘটনা বনগাঁ শহরে। দুর্গা পুজোর আগে পর পর চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন শহরবাসী। পুলিশের ভূমিকায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। শহরবাসী মনে করছেন, পুলিশি নজরদারি অভাবের কারণেই চুরির হিড়িক পড়েছে।

সোমবার ভরসন্ধ্যায় ফাঁকা বাড়িতে চুরি হয় চড়কতলা এলাকায়। শিপ্রা রায় স্বামী মারা যাওয়ার পরে বাড়িতে মেয়ে সমতাকে নিয়ে থাকেন। বাড়ির কাছেই শিপ্রার একটি দর্জির দোকান আছে। সন্ধ্যায় তিনি দোকানে ছিলেন। মেয়ে গিয়েছিলেন গৃহশিক্ষকতা করতে। বাড়ি তালা দেওয়া ছিল। সন্ধে ৭টা নাগাদ সমতা বাড়ি ফিরে দেখেন, ঘরের তালা ভাঙা। ঘরের সামনে ও পিছনের দরজার তালা ভেঙে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। আলমারি ও শোকেস ভেঙে সোনা ও রূপোর গয়না চুরি করে নিয়ে যায়। শিপ্রা জানান, মেয়ের বিয়ের জন্য বহু কষ্ট করে সোনার গয়না বানিয়েছিলেন। প্রায় সাত ভরি গয়না খোওয়া গিয়েছে। সমতা জানান, বিকেল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত লোডশেডিং ছিল। জেনারেটরের লাইনও ছিল না। এমনটা এখানে হয় না। ভরসন্ধ্যায় চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত ওই এলাকার মানুষ।

বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশ কর্তাদের বলেছি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো পুজোর আগে পুলিশকে টহলদারি ও নজরদারি বাড়াতে হবে।’’

বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘চুরির ঘটনা বন্ধ করতে আমরা আরও বেশি করে পুলিশি টহল ও নজরদারি বাড়িয়েছি। যাঁরা বাড়ি খালি রেখে অন্যত্র যাচ্ছেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ, তাঁরা যেন পুলিশকে জানিয়ে যান। তা হলে ওই বাড়ির উপরে পুলিশ নজর রাখতে পারবে।’’

সোমবার দুপুরে আরও একটি চুরির ঘটনা ঘটেছে একমাইল পোস্ট এলাকায়। চায়ের দোকানি সম্রাট দেবনাথ দোকান বন্ধ করে বাড়িতে খেতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, দোকানের পিছনে থাকা টিনের দরজার তালা ভাঙা ও শিকল কাটা। নগদ টাকা খোওয়া গিয়েছে। দিন কয়েক আগে ওই এলাকাতেই একটি মুদির দোকানে চুরি হয়। দিন কয়েক আগে বনগাঁ থানার কাছে টাউনহল পাড়ায় এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বাড়িতেও চুরি হয়েছিল।

বনগাঁ শহরে বেশ কিছু দিন ধরে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে। কখনও ফাঁকা বাড়িতে, কখনও মন্দিরে বা দোকানে। চোরেরা মূলত ফাঁকা বাড়িকে লক্ষ্য করছে। পরিস্থিতি এমনই, মানুষ তালা বন্ধ করে বাজারে যেতেও ভয় পাচ্ছেন। পুজোর সময়ে শহরের অনেকেই বেড়াতে যান। এ বার তাঁরা বাড়ি ফাঁকা রেখে যেতে ভয় পাচ্ছেন। শহরবাসীর বক্তব্য, প্রতি বছরই দুর্গা পুজোর আগে বনগাঁ শহর ও সংলগ্ন এলাকায় চুরি কেপমারির ঘটনা বাড়ে। পুলিশ কর্তাদের তা অজানা নয়।

এখন বনগাঁ পুলিশ জেলা হয়েছে। এখনও যদি নিরাপত্তা না বাড়ে, তা হলে খুবই চিন্তার বিষয়। চুরির ঘটনা ঘটলেও দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। চুরি যাওয়া মালপত্রও উদ্ধার করা যাচ্ছে না বলে ক্ষোভ জমছে অনেকের। পাশাপাশি মানুষজন জানাচ্ছেন, সার্বিক ভাবে বনগাঁর আইন-শৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হয়েছে। বড় কোনও অপরাধ ঘটেনি। কিন্তু পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানোর দাবি উঠছে।

শহরের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘রাতে পুলিশের নজরদারি চোখে পড়ছে না। রাতভর টহল থাকে না। রাতে বাড়িতে আতঙ্কে থাকতে হয়। সকালে দোকানে এসে সব ঠিকঠাক দেখে স্বস্তি ফিরে পাই।’’

Bongaon Theft
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy