দীর্ঘ দিন অবহেলায় পড়ে থাকার পরে অবশেষে সংস্কার হতে চলেছে ‘হেরিটেজ’ রানওয়ের।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ভারতের অন্যতম বায়ুসেনা ছাউনি ছিল বীজপুরের জেঠিয়া পঞ্চায়েতের মালঞ্চ গ্রাম। গ্রামের বুক চিরে চলে যাওয়া রাস্তা ছিল সে সময়ের রানওয়ে। রয়্যাল এয়ারফোর্সের ঘাঁটি থেকে স্পিড ফায়ার, হ্যারিকেন, টি-ফর্টিস-এর মতো ছোট প্লেন ওঠানামা করত এই রানওয়েতে। ঝাঁ-চকচকে বাঁধানো রানওয়ে এখন হাড়-পাঁজর বার করা গ্রামীণ সড়ক।
নির্বাচনের আগে দু’-এক বার পঞ্চায়েতের উদ্যোগে কোথাও কোথাও রাস্তায় তাপ্পি পড়লেও এক বর্ষাতেই তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাস্তাটিকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করে তার সংস্কার করা হোক— এই দাবিতে ব্যারাকপুর ১ ব্লক অফিসে বহু বার ছুটোছুটি করেছেন এলাকার বাসিন্দা মনোজ দাস, সমীর ঘোষরা। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের।
জেলা পরিষদ ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডেকেছে। ওয়ার্ক অর্ডারও বেরিয়ে গিয়েছে। রাস্তা সংস্কারের জন্য খরচ হবে ৪২ লক্ষ টাকা। চলতি মাসের শেষেই রাস্তার কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই রাস্তাটি এখানকার মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ দিন পরে রাস্তাটি সারানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
বছর পনেরো আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার টাকায় ওই রাস্তাটি সারানোর খসড়া তৈরি হয়। সিপিএমের দখলে এই পঞ্চায়েত থাকলেও রাস্তা সারানোর জন্য টাকা খরচ করা হয়েছিল এক বারই। কিন্তু সেই রাস্তা টেকেনি। তখনকার পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান অমলেন্দু বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘এই রাস্তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুযায়ী কাজের কাজ সে ভাবে কিছু হয়নি।’’ বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়, বীজপুরের ওই বায়ুসেনা ছাউনিতে এমন ছ’টি রানওয়ে ছিল। যুদ্ধের পরে এখান থেকে বায়ুসেনার ঘাঁটি সরে গেলে সেনা ছাউনির জায়গা কমে যায়। কাটা পড়ে রানওয়েটিও।