Advertisement
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ঢেউ উঠবে যমুনায়, আশা

নামেই নদী, নাব্যতা হারিয়ে যমুনা বহু দিনই মৃতপ্রায়। কচুরিপানার ফাঁদে নদীর স্রোতও হারিয়ে গিয়েছে। অতীতের স্রোতস্বিনী নদীকে দেখলে এখন কষ্ট পান এলাকার প্রবীণ মানুষেরা।

অপেক্ষা: শুরু হল যমুনা নদী থেকে পলি তোলার কাজ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

অপেক্ষা: শুরু হল যমুনা নদী থেকে পলি তোলার কাজ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২৪
Share: Save:

নামেই নদী, নাব্যতা হারিয়ে যমুনা বহু দিনই মৃতপ্রায়। কচুরিপানার ফাঁদে নদীর স্রোতও হারিয়ে গিয়েছে। অতীতের স্রোতস্বিনী নদীকে দেখলে এখন কষ্ট পান এলাকার প্রবীণ মানুষেরা।

যমুনার হৃতগৌরব ফিরিয়ে দিতে শনিবার থেকে পলি তুলে নদী সংস্কারের কাজ শুরু করল সেচ দফতর। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারাসতে যাত্রা উৎসবের মঞ্চ থেকে যমুনা নদী থেকে পলি তোলা প্রকল্পের শিলান্যাস করেন।

সেচ দফতরের বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সোমেন মিশ্র বলেন, ‘‘শনিবার থেকে যমুনা নদী থেকে পলি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। মোট ৫১ কিলোমিটার নদীপথ থেকে পলি তোলা হবে। খরচ পড়ছে ২৬ কোটি টাকা।’’

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট মহকুমার চারঘাট ব্রিজ ও গাইঘাটার ঘোঁজা-হাঁসপুর ব্রিজ— এই দু’টি এলাকায় আলাদা আলাদা ভাবে পলি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। পলি তুলে নদীর গভীরতা ১-২ মিটার পর্যন্ত বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের আধিকারিকেরা।

এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই নদীটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে তাঁদের সেই দাবি পূরণ হওয়ায় খুশি সকলেই। শনিবার ঘোঁজা-হাঁসপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে পলি তোলা হচ্ছে। বহু মানুষ তা দেখতে ভিড় করেছেন।

এলাকার প্রবীণ মানুষদের যমুনাকে ঘিরে শৈশবের নানা স্মৃতি আছে। ভিড় করেছেন তাঁদের অনেকেও। তাঁরা জানালেন, আগে নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চাললাতেন। নদীতে স্রোত এলে মাছও মিলবে বলে তাঁদের আশা।

এক সময়ে নদী ছিল খরস্রোতা। নৌকোয় যাতায়াত করতেন অনেকেই। চাষিরা ধান, পাট, আনাজ নিয়ে নৌকোয় আসতেন শহরে। এক বৃদ্ধা জানালেন, বিয়ের পরে নৌকো করেই শ্বশুরবাড়িতে পা রেখেছিলেন।

নদীটি চাষিদের কাছে এখন আতঙ্কের। ফি বছর দুর্গাপুজোর আগে বৃষ্টিতে এলাকার বিস্তীর্ণ কৃষিজমি জলের তলায় চলে যায়। নদীর জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়াতেই এই বিপত্তি। ফসলের ক্ষতি হয়। জল সরতে মাস চারেক সময় লেগে যায়। এ ভাবে বছরের পর বছর চলতে চলতে বহু জমি এক ফসলিতে পরিণত হয়েছে বলে জানালেন অনেকে। যে সব মৎস্যজীবী যমুনার উপরে নির্ভর করে সংসার চালাতেন, তাঁদের অনেকে জীবিকা হারিয়ে খেতমজুর, দিনমজুরের পেশায় পা রেখেছেন। সকলেরই আশা, নদী বেঁচে উঠলে এলাকার অর্থনীতিরও হাল ফিরবে।

অন্য বিষয়গুলি:

River Irrigation Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy