বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে টক্কর দিয়ে কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হলেও হামলাকারীদের সামনে পুলিশের এলাকা ছাড়া ঠিক হয়নি। এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা।
গত সোমবার সংশোধিত ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়ের বেশ কিছু এলাকা। দফায় দফায় পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বাধে। বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী ইটের আঘাতে জখম হন। পুলিশের কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। পুলিশের লাঠিতে জখম হন বেশ কয়েক জন। প্রমাণ লোপাট করতে এলাকার বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা ভেঙে দিয়ে যায় হামলাকারীরা। এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগরপাল (বুধবার রাতেও উত্তর কাশীপুর থেকে ধরা পড়েছে তিন জন)।
বৃহস্পতিবার দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ শোনপুর বাজারে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন
নগরপাল মনোজ বর্মা। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত নগরপাল (১) ডি পি সিংহ, অতিরিক্ত নগরপাল (৩) শুভঙ্কর সিংহ সরকার, ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা-প্রধান রূপেশ কুমার-সহ পদস্থ পুলিশকর্তারা। মনোজ ওই দিনের ঘটনার বিবরণ শোনেন উত্তর কাশীপুর থানার ওসি অমিত চট্টোপাধ্যায় ও সার্জেন্ট হাসানুজ্জামানের কাছ থেকে। পরে শোনপুর বাজারের ভাঙা সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখেন। সেখান থেকে নগরপাল উত্তর কাশীপুর থানায় এসে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মনোজ বলেন, ‘‘ওই দিন পুলিশ মার খেয়েও বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে ছাড়েনি। তবে, হামলাকারীদের সামনে এলাকা ছাড়া ঠিক হয়নি। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে লড়াই করা উচিত ছিল।’’ কাজে উন্নতি ঘটাতে পুলিশের কী কী প্রয়োজন, তা জানতে চান মনোজ। ভাঙড় ডিভিশনে পুলিশবাহিনী আরও বাড়ানো হবে, আরও গাড়ি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
নলমুড়িতে ডিসি অফিস হয়ে এ দিন কলকাতায় ফেরেন নগরপাল। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘ভাঙড় ডিভিশনে যে সমস্ত থানা অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলির এবং পুলিশ লাইন তৈরির জন্য জমি চেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জমির কী পরিস্থিতি, তা খতিয়ে দেখতে এসেছি। ওই দিন একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, যা কাম্য ছিল না। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছি।’’ তিনি জানান, পুলিশকে বলা হয়েছে, সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে। আর যাতে কোনও গন্ডগোল না হয়, সে জন্য সমস্ত পুলিশ অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)