বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পেট্রাপোল সুসংসহত চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য এবং যাত্রী আরও বাড়বে বলে মনে করেছে ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। সে কারণে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোলের পরিকাঠামো তৈরির বাকি থাকা কাজ দ্রুত শেষ করতে চাইছে তারা। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই পেট্রাপোল বন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে। গত বছর অগস্ট মাসে পেট্রাপোলে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি যাত্রী টার্মিনাল ভবন এবং মৈত্রী দুয়ারের উদ্বোধন করেছিলেন। এ বার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে এলেন ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জয়ন্ত সিংহ। মঙ্গলবার তিনি পেট্রাপোল সুসংহত চেকপোস্ট এলাকার ঘুরে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পেট্রাপোলের ম্যানেজার কমলেশ সাইনি।
বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। জয়ন্ত পরে বলেন, “পেট্রাপোলে পরিকাঠামো উন্নয়নের অন্যতম বড় প্রকল্পের কাজ চলছে আমাদের। ইতিমধ্যেই অনেক কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলি দ্রুত শেষ করা হবে। এ ছাড়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরিকাঠামো উন্নয়নের আরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।” তিনি জানান, এখন বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য বাণিজ্য কম বেশি স্বাভাবিক আছে। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতি হলে দু’দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য এবং যাত্রী যাতায়াত আরও বাড়বে। সে কারণেই বন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। চেয়ারম্যানের কথায়, “পণ্য বাণিজ্য দু’দেশেরই প্রয়োজন। বাংলাদেশের আরও বেশি প্রয়োজন। আমরা চাই দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক এবং শান্তি থাকুক। এই কাজে বাণিজ্য একটা মাধ্যম হতে পারে।”
গত বছর পেট্রাপোলে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য সাড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। যাত্রী টার্মিনাল ভবনটি প্রায় ৬০ হাজার বর্গমিটার জুড়ে তৈরি হয়েছে। খরচ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। রোজ ২৫ হাজার যাত্রী সামলাতে পারবে এই টার্মিনাল। বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ হয় এই বন্দর দিয়ে। প্রায় ২৪ লক্ষ যাত্রী ২০২৩-২৪ সালে এই বন্দর দিয়ে যাতায়াত করেছেন। এখন অবশ্য যাত্রী যাতায়াত অনেকটা কমে গিয়েছে বাংলাদেশে অশান্তির কারণে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে আমরা বলেছি সুসংহত চেকপোস্টে রোদের মধ্যে আমাদের কাজ করতে হয়। তাই ক্লিয়ারিং এজেন্টদের ছাউনি এবং বসার জায়গার ব্যবস্থা করার আবেদন করেছি।” কার্তিক জানান, মৈত্রী দুয়ার চালু হওয়ায় পণ্য রফতানি বেড়েছে। এখন গড়ে প্রায় ৪০০ ট্রাক পণ্য বাংলাদেশে যাচ্ছে। বেনাপোল থেকে যশোর রোড দিয়ে আর খালি ট্রাক যাতায়াত করছে না। তবে পণ্য রফতানি ট্রাকের পরীক্ষার জন্য স্ক্যানার চালু করা জরুরি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)