পাশে: চলছে টিকিট বিক্রি
বন্ধুর জীবন বাঁচাতে উদ্যোগী হল ক্লাব সদস্যেরা। পরিবারের একমাত্র সম্বল বসত ভিটেটুকু যাতে বিক্রি করতে না হয়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন সকলে মিলে। চিকিৎসার খরচ তোলার জন্য আয়োজন করা হয়েছে লটারির।
বসিরহাটে অমিত পালিত মেধাবী যুবক। বিএসসি পাস করেছেন। কিন্তু কিডনি দু’টি অকেজো। চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকা দরকার। অমিতের পরিবার পাশে পেয়েছে কর্মকারপাড়ার যুবকবৃন্দ ক্লাবের ছেলেদের। প্রায় তিন লক্ষ টাকার লটারির টিকিট বিক্রি করেছে ক্লাবের ছেলেরা। ওই টাকার একটা অংশ পুরস্কারের পিছনে খরচ করার পরে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা অমিতের বাবা অমল পালিতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার দুপুরে বসিরহাটের ওই ক্লাবের উদ্যোগে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস, পুরপ্রধান তপন সরকার, উপ পুরপ্রধান সুদেব সাহা, ক্লাব সভাপতি তপন বিশ্বাস প্রমুখ। তাঁদের উপস্থিতিতে ক্লাব প্রাঙ্গণে লটারিতে জয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
ক্লাবের সদস্য কমলেশ রায়, গোপাল কুণ্ডুরা জানালেন, অমিত পড়াশোনায় ভাল। কিন্তু খুব দরিদ্র পরিবার।
দু’বছর ধরে কিডনির রোগে ভূগছেন। বাবা-মা-ও অসুস্থ। গৃহশিক্ষকতা করে এবং অবসর সময়ে অন্য কাজ করে বাবা-মায়ের চিকিৎসা এবং সংসার খরচ চালাতেন অমিত। অসুস্থ হওয়ার পরে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রোজগার কার্যত বন্ধ। অমিতের চিকিৎসার খরচ জোগাতে জমি, গয়না ইতিমধ্যেই বিক্রি করতে হয়েছে। পড়ে আছে বসতবাড়িটুকুই। সেটুকু যাতে বাঁচানো যায়, ক্লাবের ছেলরা সেই চেষ্টাই করছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অমিতের দু’টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিডনি প্রতিস্থাপনে অনেক খরচ। সে কথা জানতে পেরে যুবকবৃন্দের ছেলেরা লটারির আয়োজন করেন। গত পাঁচ মাস ধরে শনি-রবি এবং ছুটির দিনে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে টিকিট বিক্রি চলছে। ক্লাবের সদস্যদের কথায়, ‘‘পাড়ার যে কোনও কাজে এক ডাকে পাওয়া যেত অমিতকে। ওকে কিছুতেই এ ভাবে চলে দিতে পারি না। অনেকর কাছ থেকে অনুদানও সংগ্রহ করা হয়েছে।’’ পরবর্তী সময়ে আরও টাকা যাতে তোলা যায়, সেই চেষ্টা চলছে বলে জানালেন ক্লাবের কর্মকর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কের কাছেও অনুদানের জন্য আবেদন করা হয়েছে। ক্লাবের ছেলেদের ভূমিকায় খুশি দীপেন্দুবাবুও। তিনিও অমিতের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
ছেলের চিকিৎসায় সকলকে এ ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখে দু’চোখ বেয়ে জল নেমে এল অমলবাবুর। বললেন, ‘‘বেশ ছিল ছেলেটা। হঠাৎ এ ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে ভাবিনি। মায়ের চিকিৎসার জন্য ভেলোরে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখনই জানা যায় শরীরের এই অবস্থার কথা। ওর বন্ধুরা যে ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তাতে আমি অভিভূত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy