পোষ্যদের ক্লিনিকে বন্ধ্যত্বকরণের জন্য আনার পরে নিখোঁজ হয়ে যায় মাস দশেকের একটি বেড়াল। যা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে কার্যত হুলস্থুল চলল নরেন্দ্রপুর থানার খেয়াদহের আটঘড়া এলাকায়। বেড়ালের খোঁজে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার মালিক। এলাকায় বেড়ালের ছবি দেওয়া পোস্টার, হ্যান্ডবিল বিলি করে শুরু হয় খোঁজ। বেড়াল খুঁজে দিলে আর্থিক পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করা হয়। অবশেষে সমস্ত উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে সোমবার বিকেলে ঘরে ফিরেছে মিনি নামে সেই বেড়াল।
যাদবপুরের সন্তোষপুর এলাকার বাসিন্দা, কলেজপড়ুয়া দেবপ্রিয়া ঘোষের পোষা বেড়াল মিনি। শুধু মিনিই নয়, আরও ছ’টি বেড়াল রয়েছে দেবপ্রিয়াদের। গত মাসের ২৯ তারিখ মিনিকে খেয়াদহ-২ পঞ্চায়েতের আটঘড়া এলাকার একটি পোষ্য চিকিৎসালয়ে নিয়ে যান দেবপ্রিয়ারা। অস্ত্রোপচারের পরে ৭ তারিখ বাড়ি ফেরার কথা ছিল মিনির। কিন্তু দেবপ্রিয়া জানান, ভর্তির পরের দিন থেকেই নানা টালবাহানা শুরু করেন ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। চাইলেও মিনির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। তাঁরা ক্লিনিকে আসতে চাইলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে বারণ করা হয়। ভিডিয়ো কলেও দেখানো হয়নি মিনিকে। এর পরে ৫ মে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের তরফে দেবপ্রিয়াদের জানানো হয়, মিনি ক্লিনিক থেকে পালিয়েছে।
সেই দিনই নরেন্দ্রপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন দেবপ্রিয়ারা। তবে, সেখানেই থেমে থাকেননি তাঁরা। আটঘড়া এলাকায় যেখান থেকে মিনি নিখোঁজ হয়েছিল, সেখানে গিয়ে খোঁজ শুরু করেন তাঁরা। এলাকার বাড়ি বাড়ি এবং দোকানগুলিতে ঘোরেন দেবপ্রিয়া ও তাঁর মা। মিনির ছবি দেখিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। মিনির ছবি দেওয়া পোস্টার ছাপিয়ে দেওয়ালে দেওয়ালে লাগিয়ে দেন। মিনিকে খুঁজে দিতে পারলে দু’হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেন। গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার এলাকায় খোঁজ চালান দেবপ্রিয়া ও তাঁর মা। অবশেষে সোমবার খোঁজ মেলে মিনির। ওই ক্লিনিকের পাশের একটি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরা পোস্টারে দেওয়া নম্বরে ফোন করে জানান, ওই আবাসনে দেখা গিয়েছে একটি বেড়ালকে। খবর পেয়েই সেখানে চলে আসেন দেবপ্রিয়ারা। তাঁদের দেখেই ছুটে আসে মিনি। মিনিকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন দেবপ্রিয়ারা। ফেরার আগে পুরস্কারের দু’হাজার টাকা দিয়ে আসেন নিরাপত্তারক্ষীদের।
দেবপ্রিয়া বলেন, ‘‘মিনি পরিবারেরই এক জন। ওকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে পরিবারের সকলে খুব ভেঙে পড়েছিল। এখন আমরা খুবই খুশি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পেট ক্লিনিকের গাফিলতিতেই আমরা আমাদের মিনিকে হারাতে বসেছিলাম। ওদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।’’ যদিও এই অভিযোগ সম্পর্কে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে চাননি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)