E-Paper

দু’টি পাউরুটি, একটি কলা খেয়ে দিন কাটত ফজেরদের

ফজেরদের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার হরিহরপুর গ্রামে। রাজমিস্ত্রির কাজ করেন ফজের। তিনি জানান, গ্রামে কাজকর্ম তেমন ছিল না। থাকলেও রোজগার সামান্য।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০৭:৫১
সস্ত্রীক ফজের।

সস্ত্রীক ফজের। —নিজস্ব চিত্র।

ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড দেখিয়ে বার বার ফজের বলেছিলেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। কিন্তু কে শোনে কার কথা! বাংলাদেশি নাগরিক সন্দেহে ফজের ও তাঁর স্ত্রী তসলিমাকে মহারাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করেছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ, বিএসএফ। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে তাঁরা ফিরেছেন দেশের বাড়িতে।

ফজেরদের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার হরিহরপুর গ্রামে। রাজমিস্ত্রির কাজ করেন ফজের। তিনি জানান, গ্রামে কাজকর্ম তেমন ছিল না। থাকলেও রোজগার সামান্য। এ সব কারণে মাস ছয়েক আগে পাড়ি দেন মুম্বই। থাকতেন নয়নগর এলাকায়। সেখানে কাজ করে রোজগার বেড়েছিল প্রায় তিন গুণ।

সুর কাটে মাসখানেক আগে। ফজের জানান, রাত ২টো নাগাদ দরজায় কড়া নাড়ে মহারাষ্ট্র পুলিশ। তুলে নিয়ে গিয়ে রাখে একটি বাড়িতে। সেখানে কয়েক জন বাংলাদেশিকেও রাখা হয়েছিল। তাঁরা এ দেশের নাগরিক, নানা পরিচয়পত্র দেখিয়ে এ কথা বললেও, কানে তোলেনি ভিন্ রাজ্যের পুলিশ। ফজের জানান, চার দিন আটকে রাখা হয়েছিল তাঁদের। সারা দিনে বরাদ্দ ছিল দু’টি পাউরুটি ও কলা। সঙ্গে ছোট একটি জলের বোতল। বহু কাকুতিমিনতির পরে শৌচাগারে যাওয়ার অনুমতি মিললেও, সঙ্গে থাকত পুলিশ।

ফজের জানান, চার দিন পরে স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সেখান থেকে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উত্তর দিনাজপুর সীমান্তে পাঠানো হয় স্বামী-স্ত্রীকে। রাত ২টোর সময়ে বিএসএফ জানায়, সীমান্তে গেট খুলে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা বাংলাদেশ চলে যেতে পারেন। পালানোর চেষ্টা করলে গুলি করা হবে।

‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিবি)একটি ঘরে থাকতে দিয়েছিল তাঁদের। খেতেও দেয়। তারাই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে রাজ্য সরকারের তৎপরতায় বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যেআলোচনার পরে, বিজেবি তাঁদের উত্তর দিনাজপুর সীমান্তে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরেন তাঁরা।

ফজেরের বাবা তাহাজুলের দাবি, ‘‘আমাদের পূর্বপুরুষও ভারতীয়। এখানেই আমাদের জম্ম-কর্ম। তবু ছেলে-বৌমাকে এমন হেনস্থা হতে হল!’’ ফজেরের কথায়, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। তাই ভিন্‌ রাজ্যে ফের কাজে যেতে হবে। তবে সরকারের কাছে আবেদন, আমাদের এমন কোনও কার্ড দেওয়া হোক, যা দেখালে কোনও রাজ্যের পুলিশ অত্যাচার করতে পারবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-Bangladesh Border Security Force Maharashtra Police Bagdah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy