রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে দেশ জুড়ে চর্চার মধ্যেই, বৃহস্পতিবার চাকলার লোকনাথ মন্দির থেকে রাজ্যে বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রে উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করলেন, বাংলায় বাড়ছে তীর্থস্থান।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ হেলিকপ্টারে চাকলায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের কাছেই তৈরি হয়েছিল হেলিপ্যাড। হেলিপ্যাড থেকে হেঁটে লোকনাথ মন্দিরে গিয়ে তিনি পুজো দেন। পরে মন্দির চত্বরেই মঞ্চ থেকে মন্দির-সহ জেলার বেশ কিছু প্রকল্প উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, বারাসতের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়রা। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয় লোকনাথে মূর্তি, মানপত্র ও একটি স্মরণিকা।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন লোকনাথ মন্দিরে ভোগ বিতরণ কেন্দ্র, দু’টি প্রবেশদ্বার, ২৮টি ফুলের দোকান, টিকিট কাউন্টার-সহ বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া এই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জেলায় চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য ইউনিট ও রাস্তারও উদ্বোধন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, চাকলার লোকনাথ মন্দিরের উন্নয়নে ইতিমধ্যেই ৯ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য। তিনি বলেন, “লোকনাথ ঠাকুরের মন্দিরে আজ আমি পুজো দিয়েছি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন আমি এসেছিলাম। মন্দির চত্বরে গেট, ভোগ ভবন, টিকিট কাউন্টার, ফুলের দোকান, পুকুরের সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে। আরও নানা কাজ হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৯ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।”
শুধু চাকলা নয়, আরও এক তীর্থক্ষেত্র কচুয়াতেও উন্নয়নের কাজ হয়েছে বলে দাবি করেন মমতা। দিঘায় আগামী ছ’মাসের মধ্যেই জগন্নাথ মন্দির প্রস্তুত হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগামী ছ’মাসে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির প্রস্তুত হয়ে যাবে। আরও তীর্থক্ষেত্র বাড়বে। আমরা তীর্থস্থান জোড়ার চেষ্টা করছি। সবাই বলছে, বাংলা এখন পর্যটনের সেরা গন্তব্য।”
গঙ্গাসাগরকেও ঢেলে সাজানো হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ঠাকুরনগরে মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতেও একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে বলেও চাকলায় দাবি করেন মমতা। তিনি বলেন, “মতুয়াদের বড়মাকে আমি দেখতাম। তাঁর চিকিৎসা করেছি। আমরা মতুয়াদের জন্য অনেক করেছি। কলেজ, হাসপাতাল করেছি। কাজেই আমাদের বাংলা ধর্মীয় তীর্থস্থানের জায়গা। এই বাংলা একতার জায়গা।”
ধর্ম নিয়ে রাজনীতির সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যুগপুরুষ লোকনাথ ঠাকুর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করতেন না। হিন্দু-মুসলমান করতেন না। তাঁর কাছে ধর্ম ছিল মানবিকতা, ভালবাসা। কিন্তু এখন অনেকেই ভোটের সময় ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেন। সারা বছর তাঁদের নিপীড়ন করেন।” লোকনাথের সমস্ত গান তিনি জানেনও দাবি করেন তৃণমূলনেত্রী।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)