E-Paper

‘বালু’হীন উত্তরে প্রস্তুতির অন্য ছবি!

কমিটির সদস্য তথা জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘দলের নাম তৃণমূল। নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, কর্মিসভার আয়োজনে কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে না।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৩০
An image of Jyotipriya Mallick

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় দু’মাস ধরে তিনি শ্রীঘরে। তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্র হাবড়া ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার অন্যত্র দলীয় সভা-সমাবেশে ইদানীং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম খুব একটা শোনা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে না তাঁর ছবি। জ্যোতিপ্রিয়ের (বালু নামেই যিনি বেশি পরিচিত) অনুপস্থিতিতে আগামী বৃহস্পতিবারই প্রথম জেলায় কর্মিসভা করতে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের পুরনো কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই মানছেন, নিয়মমাফিক প্রস্তুতি-সভা চললেও জ্যোতিপ্রিয়ের সেই পুরনো তৎপরতার ছবিটা সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না।

এ কথা মানছে না দলের জেলা কোর কমিটি। প্রসঙ্গত, কোর কমিটির আয়োজনেই আগামী বৃহস্পতিবার চাকলায় কর্মিসভা করতে আসছেন মমতা। ওই কমিটির পক্ষ থেকে জেলায় দলের ১০ হাজার জনপ্রতিনিধি ও কর্মীকে সভায় হাজির করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার পরে সম্প্রতি এই জেলায় দলীয় সংগঠন পরিচালনার জন্য ৯ জনের কোর কমিটি তৈরি করেন তৃণমূল নেত্রী।

কমিটির সদস্য তথা জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘দলের নাম তৃণমূল। নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, কর্মিসভার আয়োজনে কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে না। বিধায়ক সুজিত বসু সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমাদের প্রায় ১০ হাজার ‘ডেলিগেট’ সভায় আসবেন। সকলকে কার্ড দেওয়া হচ্ছে।’’ সুজিতই সভার আহ্বায়ক।

কিন্তু দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের অনেকের অভিজ্ঞতা বলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখনই উত্তর ২৪ পরগনায় কোনও কর্মসূচিতে (দলীয় হোক বা প্রশাসনিক) এসেছেন, ছায়াসঙ্গী হিসেবে দেখা গিয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে। দলনেত্রীর কোনও কর্মসূচির আগে তাঁর ব্যস্ততার শেষ থাকত না। যাবতীয় দায়িত্বের অনেকটাই নিজের কাঁধে তুলে নিতেন। পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। তাঁদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করতেন। নিজে কয়েক বার করে সভাস্থল পরিদর্শন করতেন। সভায় বেশি করে কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দিতেন। এলাকায় এলাকায় গিয়ে প্রস্তুতি সভা করা, গাড়ির আয়োজন করা— সব দিকেই নজর থাকত তাঁর।

এ বার যে সব হচ্ছে না, এমনটা নয়। দলের নেতা-কর্মীদের বড় অংশের দাবি, সবই হচ্ছে। কিন্তু কিছুটা যেন অগোছালো ভাবে। সোমবার জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসার সময়ে বালুদার সেই তৎপরতাই এ বার চোখে পড়ছে না। ফোন করে সভায় চলে যাওয়ার নির্দেশ এ দিন পর্যন্ত কেউ দেননি।’’

বালুর অনুপস্থিতিতে ওই সভা সফল করাটা জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে একটা চ্যালেঞ্চ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত ২৩ ডিসেম্বর মধ্যমগ্রামে দলীয় কার্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মিসভার প্রস্তুতি উপলক্ষে একটি জরুরি সভা করেন তৃণমূল নেতারা। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জেলায় তৃণমূলের চারটি সাংগঠনিক জেলা আছে (বনগাঁ, বারাসত, বসিরহাট এবং দমদম-ব্যারাকপুর)। ওই সাংগঠনিক জেলার সভাপতিরা নিজেদের এলাকায় আলাদা আলাদা করে প্রস্তুতি সভা করছেন। জেলার এক তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকে বালুদা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে, তাঁর অভাব খুব বেশি অনুভব হচ্ছে না।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এখান থেকে দু’হাজার জন সভায় যাবেন।’’

‘বালু’হীন জেলায় লোকসভা ভোটের আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে তৃণমূল নেত্রী কী বার্তা দেন, সে দিকে তো সকলের নজর থাকছেই, জল্পনা চলছে বালু সম্পর্কেও তিনি কিছু বলেন কি না!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jyotipriya Mallick Mamata Banerjee TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy