Advertisement
E-Paper

বেআইনি ভাবে দেদার বিকোচ্ছে অ্যাসিড, ধৃত

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ওই দোকানে নয়, কোনও অনুমতি ছাড়াই হাবরা, অশোকনগর, বনগাঁ গাইঘাটা, বাগদা, গোপালনগরে দেদার বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। অভিযোগ, এই বিষয়ে কোনও নজরদারি নেই পুলিশ প্রশাসনের।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৯
হাবরার একটি মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

হাবরার একটি মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বেআইনি ভাবে দোকানে অ্যাসিড বিক্রির অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার রাতে হাবরার শ্রীনগর ২৯ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম স্বরূপ সাহা। তার ওই এলাকায় একটি হার্ডওয়্যারের দোকান আছে। সেখান থেকেই অ্যাসিড বিক্রি করত সে।

দিন কয়েক আগে স্থানীয় মহিষা এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা অ্যাসিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অভিযোগ, রাম দাস নামে মহিলারই এক পরিচিত যুবক তাঁকে অ্যাসিড ছুড়েছিল। তাঁকে তড়িঘড়ি হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ রামকে গ্রেফতার করে। সে এখন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, ওই অ্যাসিড সে কিনেছিল স্বরূপের দোকান থেকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ওই দোকানে নয়, কোনও অনুমতি ছাড়াই হাবরা, অশোকনগর, বনগাঁ গাইঘাটা, বাগদা, গোপালনগরে দেদার বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। অভিযোগ, এই বিষয়ে কোনও নজরদারি নেই পুলিশ প্রশাসনের। কখনও কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশ তখন নড়েচড়ে বসে। কিছুদিন আগেও হাবরা থানার পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল। তারও ছিল হার্ডওয়্যারের দোকান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দোকানে বেআইনি ভাবে বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। আর তা থেকেই ঘটছে নান অপরাধমূলক ঘটনা। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘কোনও দোকানে যদি গোপনে অ্যাসিড বিক্রি হয়। তার খোঁজ পুলিশের পক্ষে পাওয়া কঠিন। এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের সচেতনতা কাম্য।’’ বনগাঁ ও হাবরার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বাজার এলাকার দোকান তো বটেই পাড়ার বা গ্রামের মুদির দোকান, খাবারের দোকান, হার্ডওয়্যার বা অন্য দোকানেও অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে। বনগাঁ শহরের এক অ্যাসিড বিক্রেতা মুদির দোকানি বলছিলেন, ‘‘আমরা জানি এ ভাবে অ্যাসিড বিক্রি করা বেআইনি। তবে স্থানীয় মানুষের মধ্যে নানা কাজের জন্য অ্যাসিডের চাহিদা থাকায় আমরা তা বিক্রি করি।’’ তবে বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রেতাদের বক্তব্য, তাঁরা লোক বুঝে অ্যাসিড বিক্রি করেন।

অ্যাসিড বিক্রি করার সরকারি নিয়ম কানুন কী? দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসিড আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ায় সেভ ডেমোক্রেসি সংগঠন। সেই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অ্যাসিড বিক্রি করতে হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিক্রেতাকে সরকারি লাইসেন্স নিতে হবে। দোকানে কত পরিমাণ অ্যাসিড মজুত আছে প্রকাশ্যে লিখে দোকানের সামনে রাখতে হবে। যাঁর কাছে তিনি অ্যাসিড বিক্রি করছেন তাঁর নাম ঠিকানা, সচিত্র পরিচয় পত্র জমা রেখে রেজিস্ট্রারে লিখে রাখতে হবে। কতটা অ্যাসিড বিক্রি করলেন, কী উদ্দেশ্যে ক্রেতা কিনলেন তাও লিখে রাখতে হবে। শেষে ক্রেতাকে স্বাক্ষরও করিয়ে নিতে হবে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাস্তবে ওই নিয়ম কানুন না মেনেই বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ ধরা পড়লে তাঁক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।’’

হাবরা থানা সূত্রে জানানো বয়েছে, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিকে বলা হয়েছে তাঁরা যেন অ্যাসিড বিক্রি বন্ধ করতে পদক্ষেপ করেন। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে অ্যাসিড বিক্রি নিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’

arrest acid illegal trading হাবরা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy