পাকড়াও: ধরা পড়ার পরে শিবু যাদব। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে গ্রেফতার করা হল ব্যারাকপুরে মণিরামপুর-সদরবাজার এলাকার ত্রাস, তৃণমূলের নেতা শিবু যাদব ওরফে ভাইয়াকে। মঙ্গলবার রাতে নিজের খাসতালুক সদরবাজারের নয়াবস্তি থেকেই গ্রেফতার করা হয় তাকে।
পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে মণিরামপুর এলাকায় শেখ চাঁদু নামে এক ব্যক্তিকে লক্ষ করে গুলি ছোড়া হয়। সেই ঘটনাতেই ভাইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। একই ঘটনায় এর আগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে তাকে চার দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র-সহ জামিন-অযোগ্য বেশ কয়েকটি ধারা দেওয়া হয়েছে। গোলমাল পাকানোর অভিযোগে ভাইয়ার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দুই দুষ্কৃতীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ভাইয়াকে যে গ্রেফতার করা হবে, তা বেশ কিছু দিন আগেই আঁচ করা গিয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই তার দিকে অভিযোগের তির থাকলেও পুলিশ জানিয়েছিল, ঘটনার রাতে সে মালদহে ছিল। কিন্তু, এই ঘটনায় দলকে পাশে পায়নি ভাইয়া।
ভাইয়া ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ বলেই জানে তামাম ব্যারাকপুর। শেখ চাঁদু গুলি খাওয়ার পরে এলাকায় কার্যত জনরোষ তৈরি হয়েছিল। সেই রোষ টের পেয়েছিলেন অর্জুনও। ঘটনার পরের দিন এলাকায় গিয়ে ভাইয়ার নামে বিস্তর অভিযোগ শুনতে হয়েছিল তাঁকে। এলাকার বাসিন্দা-ব্যবসায়ীরা অভিযোগ জানিয়েছেন, ভাইয়া এবং তার দলবলের তোলাবাজির দাপটে কারবার শিকেয় উঠেছে তাঁদের। সেখানে দাঁড়িয়েই অর্জুন জানিয়েছিলেন, অভিযুক্ত যে-ই হোক না কেন, সে পার পাবে না।
সংবাদমাধ্যমকেও অর্জুন বলেছিলেন, ‘‘শিবু নিজে গুলি না চালালেও ওর লোকেরাই করেছে। তবে ও পার পাবে না।’’ রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সেই সময়েই ভাইয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা লেখা হয়ে গিয়েছিল। তা না হলে পুলিশের সাধ্য ছিল না তাকে গ্রেফতার করার।
প্রশ্ন উঠছে, ভাইয়ার মাথা থেকে রাজনৈতিক আশ্রয়দাতাদের হাত উঠে গেলেও তাকে ধরতে পুলিশের এত সময় লাগল কেন? পুলিশ বলছে,
সে এলাকায় ছিল না। সোমবার রাতে সে নিজের এলাকায় ঢুকতেই তাদের কাছে খবর আসে। ভোরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এলাকার বাসিন্দারা কিন্তু বলছেন, দিনে তাকে এলাকায় দেখা না গেলেও রাতে নিয়মিত দেখা যেত। তৃণমূল নেতাদের একটি অংশ জানাচ্ছেন, ভাইয়াকে গ্রেফতারে রাজি করানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রেও প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। কোনও কিছুর বিনিময়েই কি সে গ্রেফতারে রাজি হয়েছে? উত্তর আপাতত অজানা। অর্জুন সিংহ বলছেন, ‘‘এর মধ্যে রাজনীতি নেই। অপরাধ করলে সাজা পেতেই হবে।’’
তবে এলাকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যদি ‘গড়াপেটা-গ্রেফতার’ হয়, তা হলে ভাইয়া ‘পুনর্বাসন’ পেয়ে ফের এলাকায় ত্রাসের সাম্রাজ্য গড়বে না তো?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy