Advertisement
E-Paper

সহায় হ্যাম রেডিয়ো, দেড় মাস পরে বাড়ি ফিরলেন বৃদ্ধা

পুলিশ সূত্রের খবর, শ্যামরতি রজক নামে ওই বৃদ্ধা উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা। তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে পরিবারের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৬
শনিবার সন্তানদের সঙ্গে শ্যামরতি। নিজস্ব চিত্র

শনিবার সন্তানদের সঙ্গে শ্যামরতি। নিজস্ব চিত্র

প্রতিদিনই পাড়া ঘুরতে বেরোতেন। সন্ধ্যায় ঠিক বাড়ি ফিরতেন। দুর্গাপুজোর দশমীতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। শেষে দেড় মাস পরে বাড়ি থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে সন্ধান মিলল সেই বৃদ্ধার। হ্যাম রেডিয়োর সাহায্যে শনিবার বাড়ি ফিরলেন তিনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, শ্যামরতি রজক নামে ওই বৃদ্ধা উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা। তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে পরিবারের দাবি। দশমীতে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। পরে পথ হারিয়ে পৌঁছে যান গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার প্রত্যন্ত উত্তর চংরা গ্রামে। স্থানীয় এবং প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ৫ ডিসেম্বর বিকেলে চংরা গ্রামে শ্যামরতিকে ইতস্তত ভাবে ঘুরতে দেখেন স্থানীয়েরা। পুলিশে খবরে দিলে ময়না থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। মহকুমাশাসকের নির্দেশে তমলুকের এক আবাসিক হোমে রাখা হয় তাঁকে। তমলুকের মহকুমাশাসক কৌশিকব্রত দে ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকের কাছে ঘটনাটি জানিয়ে ওই বৃদ্ধার পরিচয় জানার জন্য সাহায্য চান।

পুলিশ জানিয়েছে, শ্যামরতি তাদের নিজের নাম এবং বাড়ি নৈহাটি বলে জানান। কিন্তু নৈহাটির কোথায় তাঁর বাড়ি, তা তিনি বলতে পারেননি। ময়নার পুলিশ নৈহাটি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু ওই বৃদ্ধার পরিবারের তরফে নিখোঁজের কোনও অভিযোগ দায়ের না করায়, পুলিশের তাঁর বাড়ি খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। এর পরেই সাহায্য চাওয়া হয় হ্যাম রেডিয়োর কাছে।

হ্যাম রেডিয়োর সদস্যেরা নৈহাটি থানার পুলিশের সাহায্যে বৃদ্ধার পরিবারের সন্ধানে নামে। হোমে থাকা বৃদ্ধার সঙ্গে ফোনে কথা বলে বাড়ির দিক নির্দেশ শুনে পরিবারের সন্ধানের চেষ্টা চলে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চেষ্টার পরে নৈহাটি পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে অর্জুনপুকুর এলাকায় বৃদ্ধার বড় ছেলে গণেশের বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়। মাকে খুঁজে পাওয়ার কথা জানতে পারেন গণেশ ও তাঁর ভাই নরেশ। এর পরেই শ্যামরতিকে বাড়ি ফেরানোর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। হ্যাম রেডিয়োর সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, ‘‘তমলুক এবং ব্যারাকপুর মহকুমা প্রশাসনের কাছে বৃদ্ধার ঘটনা জানতে পেরে আমাদের সদস্যেরা খোঁজ শুরু করেন। নৈহাটি শহরে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ চালিয়ে বৃদ্ধার বাড়ির খোঁজ মেলে।’’

শনিবার তমলুকের হোম যান গণেশ এবং নরেশ। তাঁদের হাত ধরে বাড়ি ফেরেন শ্যামরতি। মা নিখোঁজ হওয়ার পরেও থানায় জানাননি কেন? জবাবে মাছের ব্যবসায়ী গণেশ জানান, ‘‘বাবার মৃত্যুর পরে মায়ের মানসিক সমস্যা হয়। মাঝে মাঝেই দূরে যেতেন। আবারও ফিরেও আসতেন। কিন্তু এ বার এত দূরে চলে আসবে, ভাবতে পারনি। মাকে ফিরে পেয়ে ভাল লাগছে।’’ মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বৃদ্ধাকে পরিবারের কাছে ফেরাতে পুলিশ ও হ্যাম রেডিয়োর সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। ওদের সাহায্যে বৃদ্ধা তাঁর পরিবার ফিরে পেয়েছেন।’’

আর যাঁকে ঘিরে এত কাণ্ড, দুই ছেলেকে দেখে হাসতে হাসতে সেই শ্যামরতি এ দিন বলেন, ‘‘বাড়ির কাছেই ট্রেনে উঠেছিলাম। কী ভাবে এখানে চলে এলাম বুঝতে পারিনি।’’

Ham Radio
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy