মাঝরাতে মেয়ের চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে মায়ের। বারান্দা থেকে ঘরে ঢুকে এসে দেখেন জনা চারেক যুবক মেয়েটির হাত-পা ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে। সেই দেখে মাও চেঁচাতে শুরু করেন। মায়ের চিৎকারে পালাতে যায় তারা। সে সময় বাবা ঘরে চলে আসেন। দুজনেই ওই চার যুবককে জাপটে ধরেন। নিজেদের বাঁচানোর জন্য তাদের মধ্যে একজন হঠাৎ একটি পাইপগান বের মাকে তাক করে গুলি করে পালায়।
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জীবনতলার পিয়ালির নতুনপল্লিতে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে বছর বাইশের সোমনাথ সর্দার নামে এক যুবককে বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
ওই কিশোরীর মা আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কিশোরীর মায়ের পেটে গুলি ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে।
এ দিনের এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে যেখানে বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল চলছে। সেখানে কী ভাবে এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রয়েছে এবং যুবকদের হাতে তা কী ভাবে আসছে?
এর উত্তরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৌম্য রায় বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন রাস্তায় নাকাবন্দি, চেকিং করছি। সন্দেহজনক গাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে। তা ছাড়া, বিভিন্ন এলাকাতেও তল্লাশি চলছে। এ দিনের ঘটনার কথা শুনেছি। এদের হাতে কী ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’’
কী ঘটেছিল?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কিশোরী ও তার পরিবার মাটির বাড়িতে থাকেন। দরমার দরজা লাগিয়ে তাঁরা ঘুমাচ্ছিলেন। সে সময় দরজা ভেঙে জনা চারেক যুবক ঘরে ঢোকে। অভিযোগ, এরপরেই নবম শ্রেণির ওই কিশোরীর মুখ চেপে ধরে শ্লীলতাহানি করে সোমনাথ। তখন তার দুই বন্ধুও সেখানে ছিল। পাশের বারান্দায় তার বাবা মা ঘুমাচ্ছিলেন। মেয়ের চিৎকারে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। মেয়েটির মা ঘরে ঢুকে এসে ডাকাত ডাকাত করে চিৎকার করেন। তখন ভয়ে ওই চার যুবক পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু নাবালিকার মা ও বাবা তাদের জাপটে ধরেন। সে সময়ে তাদের মধ্যে একজন পাইপগান বের করে ওই মহিলাকে গুলি করে পালায় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় মহিলাকে উদ্ধার করে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে চিকিৎসকেরা বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন।
ওই কিশোরী বলে, ‘‘দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আমার সর্বনাশ করতে চেয়েছিল ওরা। ওদের যেন শাস্তি হয়।’’ ওই নাবালিকার বাবা বলেন, ‘‘আমার কথা বলার মতো মানসিক অবস্থা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy