Advertisement
E-Paper

মোবাইলের সূত্রে ধরা পড়ল ‘খুনি’

বোতল ভেঙে এক সময়ের অন্তরঙ্গ বন্ধুর বুকে ঢুকিয়ে ফালা ফালা করে দিয়েছিল সে। এলোপাথাড়ি খুঁচিয়ে মুখও রক্তাক্ত করে। তারপরে বাড়ি ফিরে আসে। স্ত্রীর পাশে শুয়ে ঘুমিয়েও পরে। পরে পালিয়েও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। মোবাইলের কললিস্ট থেকে পুলিশ ধরে ফেলেছে সন্দেহভাজন খুনিকে।

রাজ ও সুষমা। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ ও সুষমা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০২:৩৫
Share
Save

বোতল ভেঙে এক সময়ের অন্তরঙ্গ বন্ধুর বুকে ঢুকিয়ে ফালা ফালা করে দিয়েছিল সে। এলোপাথাড়ি খুঁচিয়ে মুখও রক্তাক্ত করে। তারপরে বাড়ি ফিরে আসে। স্ত্রীর পাশে শুয়ে ঘুমিয়েও পরে। পরে পালিয়েও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। মোবাইলের কললিস্ট থেকে পুলিশ ধরে ফেলেছে সন্দেহভাজন খুনিকে।

পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম গৌরাঙ্গ অধিকারী ওরফে রাজ। বৃহস্পতিবার ভোররাতে বসিরহাটের কলেজপাড়া থেকে তাকে ধরা হয়। শুক্রবার রাজকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে নিহত দিলীপ বৈদ্যের স্ত্রী সুষমাকেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে দাবি করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সুষমার সঙ্গে রাজের ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল বলে তাঁদের দাবি। সুষমাও আপাতত পুলিশি হেফাজতে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে থাকতেন দিলীপ। পেশায় ভ্যানো চালক ওই যুবকের বাড়িতে রাজের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। বসিরহাটের কলেজপাড়ায় সারদা কলোনির বাসিন্দা রাজ ইয়ারদোস্তদের নিয়ে দিলীপের বাড়িতে মদের আসর বসাত। সেই সূত্রেই ধীরে ধীরে দিলীপের স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে রাজের। অভিযোগ, দিলীপকে আকণ্ঠ মদ খাইয়ে বেঁহুশ করে রাতে মাঝেমধ্যেই ওই বাড়িতে থেকে যেত সে।

এ সব জানতে পারায় স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য চরমে ওঠে দিলীপের। কিন্তু তত দিনে প্রেম ডানা মেলেছে। নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে পরস্ত্রীর সঙ্গে সাথে থাকতে শুরু করে রাজ। দু’জনে তারাপীঠ পর্যন্ত ঘুরে আসে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল বাড়ে বৈদ্য দম্পতির। কয়েক দিন আগে বাপের বাড়িতে চলে যান সুষমা। রাজও সেখানে হাজির হয় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে।

পরে অবশ্য বুঝিয়ে-সুঝিয়ে স্ত্রীকে সোমবার বিকেলে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন দিলীপ। ওই রাতেই খুন হন তিনি।

তদন্তে নেমে সুষমাকে জেরা করে পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সুষমা এবং রাজের মোবাইল আটক করে কললিস্ট পরীক্ষা করে দু’জনের সম্পর্কের ব্যাপারে নিশ্চিত হন তদন্তকারীরা। জেরার মুখে সুষমাও সব স্বীকার করেন।

এরপরেই রাজকে ধরতে জাল বিছায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোররাতে বাড়ি ফিরেছিল ওই যুবক। টাকা আর জামাকাপড় নিয়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাওয়ার ছক ছিল। কিন্তু বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে বসিরহাট থানার আইসি বাহিনী নিয়ে হাজির হন। ধরা পড়ে রাজ।

পুলিশের দাবি, জেরায় ওই যুবক জানিয়েছে, ঘটনার রাতে দিলীপের কাছ থেকে ফোন পেয়ে মদ-চাট কেনে সে। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দু’জনে বাড়ির বাইরে এক জায়গায় বসে মদ্যপান শুরু করে। নেশা চড়লে সুষমার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে কটূক্তি করতে শুরু করেন দিলীপ। মাথায় রক্ত চড়তে থাকে রাজের।

কিছু দিন আগে নিজের মোটর বাইক রাজকে দিয়ে তার থেকে নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন দিলীপ। সেই টাকাও তিনি ফেরাতে চাইছিলেন না অভিযোগ।

সব মিলিয়ে কলের মিস্ত্রি রাজের মাথায় খুন চেপে যায়। পুলিশের দাবি, রাজ জানিয়েছে, মদ খেয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়েছিল দিলীপ। ধাক্কা মেরে তাকে রাস্তার পাশের নালায় ফেলে সে। গাছের ডাল ভেঙে তাকে মারতে থাকে রাজ। তবে বোতল ভেঙে খুনের জন্যই দিলীপকে আঘাত করেছে বলে মানতে চায়নি ওই যুবক। তার দাবি, একটি মদের বোতল ভেঙে দিলীপের মুখে ঢুকে গিয়েছিল। চোট খুব বেশি নয় মনে করে তাকে ফেলে রেখে বাড়ি ফিরে যায় রাজ।

ওই যুবকের দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখছেন পুলিশ কর্তারা। তবে প্রাথমিক তদন্তে তাঁদের অনুমান, যে ভাবে রক্তাক্ত হয়েছিল মুখ-বুক, তাতে মনে হয় আক্রোশ বশত খুনের জন্যই মারধর করা হয়েছিল দিলীপকে।

ডুবে মৃত্যু। জলে ডুবে মৃত্যু হল এক যুবকের। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে তালদির দক্ষিণ বয়ারসিং এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম ছট্টু মণ্ডল (২৬)। বাড়ি ওই এলাকাতেই। পুলিশ জানায়, ছট্টু এ দিন ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ির সামনের একটি পুকুরে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। তদন্তে অনুমান, কোনও ভাবে পুকুরে পড়ে গিয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

নিষিদ্ধ কাশির ওষুধ-সহ ধৃত ২। বাংলাদেশে পাচারের সময়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল প্রায় বারোশো বোতল নিষিদ্ধ কাশির ওষুধ, নগদ ৫০ হাজার টাকা, একটি গাড়ি। বৃহস্পতিবার বসিরহাটের ইছামতী সেতুর উপরের ঘটনা। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম মুরাদবিন গাজি ও সুশান্ত মিস্ত্রি। বাড়ি বাদুড়িয়ায় চণ্ডীপুরে। ওল্ড সাতক্ষিরা রাস্তা দিয়ে ইটিন্ডা হয়ে পানিতর দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের জন্য যাচ্ছিল ওই ওষুধ।

Raj Sushma mobile murderer

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}