Advertisement
E-Paper

কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে না, জানিয়ে দিল হাসপাতাল

কিটের সমস্যা যে আছে, তা জানাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র। ওই নার্সের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও সকলের ভাগ্য এতটা সুপ্রসন্ন নয়।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৫৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি। ফাইল চিত্র

গত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্যজেলার অধীন প্রতিদিন সেফহোমে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা করছেন এক নার্স। হঠাৎ তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। করোনার বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসকের পরামর্শমতো লালারস পরীক্ষা করার কথা বলা হয়। কিন্তু লালারস পরীক্ষা করতে গিয়ে তিনি হয়রানির শিকার হন। শনিবার ভাঙড়ের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতাল থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, করোনা পরীক্ষা হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কিট না থাকায় সমস্যা হয়েছিল। পরে অবশ্য অন্য জায়গা থেকে কিট এনে পরীক্ষা করানো হয় ওই নার্সের।

কিটের সমস্যা যে আছে, তা জানাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র। ওই নার্সের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও সকলের ভাগ্য এতটা সুপ্রসন্ন নয়। তাঁদের হয়রান হতেই হচ্ছে। নমুনার পাহাড় জমতে থাকায় পরীক্ষা থমকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী, স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক এ-ও জানাচ্ছেন, শনি ও রবিবার আরটিপিসিআর পরীক্ষা বন্ধ রাখার জন্যই মৌখিক ভাবে হাসপাতালগুলিকে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে মন্তব্য করেননি দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তবে দিনভর রোগীদের অভিজ্ঞতা বলছে, এ দিন কার্যত অনেককেই টেস্ট হবে না বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভাঙড়ের কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা তন্ময় সাধুখাঁ, ভাঙড়ের বাসিন্দা শ্যামল কর্মকারদের গত কয়েক দিন ধরে জ্বর। এ দিন পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলেন নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে। পরীক্ষা করাতে পারেননি। তাঁদের জানানো হয়, আরটিপিসিআর টেস্ট হচ্ছে না। সোমবার খোঁজ নিতে বলা হয়।

জেলা স্বাস্থ্য জেলাশাসক অন্তরা আচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘করোনা টেস্ট কোথাও বন্ধ নেই। আরটিপিসিআর পরীক্ষার ক্ষেত্রে ল্যাবে নমুনা অনেকটা জমা হয়ে গিয়েছে। যে কারণে রিপোর্ট দিতে দেরি হচ্ছে। সে কারণে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের।’’ আরটিপিসিআর টেস্ট কিটের জোগানে সমস্যা আছে বলে জানাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র। তবে এমন খবর তাঁর কাছে নেই বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

করোনা পরীক্ষার জন্য সাধারণত লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে মূলত দু’ধরনের পরীক্ষা হয়। র্যাুপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ও আরটিপিসিআর টেস্ট। র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ক্ষেত্রে লালারসের নমুনা সংগ্রহের পনেরো মিনিটের মধ্যে রিপোর্ট জানা যায়। আরটিপিসিআর টেস্টের ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহের পরে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সে ক্ষেত্রে রিপোর্ট পেতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা উচিত। যদি কোনও ভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা না হয়, তা হলে সেই নমুনা ২-৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখতে হবে। না হলে নমুনা নষ্ট হতে পারে বলে জানান সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে প্রতিদিন স্বাস্থ্যজেলায় আরটিপিসিআর ও র্যাথপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আরটিপিসিআর টেস্টের ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, নাইসেড, ইএসআই জোকা প্যাথলজি ল্যাবে পাঠানো হয়। অভিযোগ, নমুনা পাঠানোর পরে রিপোর্ট আসতে ৫-৬ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে রোগী জানতেই পারছেন না তিনি আক্রান্ত কিনা। ফলে অনেকের সংস্পর্শে চলে আসছেন। সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। আবার এতটা সময় লাগায় চিকিৎসা পেতে সমস্যা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এসএসকেএম হাসপাতালে দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলা ছাড়াও বিভিন্ন পৌরসভা এলাকার নমুনা পাঠানো হচ্ছে। যে কারণে ওই সমস্ত ল্যাবগুলিতে বিপুল পরিমাণ নমুনা হাজির হচ্ছে। ফলে রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে।

COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy