স্থানীয় এক আদিবাসী কিশোরীকে দুই কিশোরের ধর্ষণের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল পাড়ায়। তিন জন একই এলাকার বাসিন্দা। সেই ভিডিয়ো এসেছিল স্থানীয় এক বাসিন্দার ফোনেও। ভিডিয়োয় ওই কিশোরী ও দুই কিশোরকে দেখে চিনতে পেরে তাজ্জব বনে যান ওই ব্যক্তি। দ্রুত তিনি কিশোরীর অভিভাবকদের বিষয়টি জানান। খবর ছড়িয়ে পড়ে পাড়ার মধ্যেও। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার একটি এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এক অভিযুক্তকে ধরে, বাতিস্তম্ভে বেঁধে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়েরা। তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপর অভিযুক্ত পাড়া ছেড়ে উধাও। তার খোঁজ চলছে। গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে স্থানীয় থানার পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, যাকে এলাকাবাসী মারধর করেছেন, সেই কিশোরকে হেফাজতে নিয়ে হোমে পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত দ্বিতীয় জন নাবালক না কি সাবালক, তা তাকে ধরার পরেই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারবে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই আদিবাসী কিশোরী ও অভিযুক্তদের বাড়ি স্বল্প দূরত্বের মধ্যে। ওই কিশোরী এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত এক কিশোরের বাড়ি ফাঁকা ছিল। সে-ই নাবালিকাকে সেখানে নিয়ে যায়। সঙ্গে আরও এক কিশোর ছিল। সেখানেই ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, ঘরের ভিতরের দৃশ্য ভিডিয়ো করে তা দুই কিশোরের বন্ধুমহলে ওয়টস্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তকারীরা জানান, কিশোরী প্রথমে ঘটনাটি তার পরিবারকে জানায়নি। কিন্তু ভিডিয়োর বিষয়টি জানাজানি হতে সে ঘটনাটি খুলে বলে। যে ব্যক্তি ওই ভিডিয়োটি দেখতে পান, তাঁর স্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমার স্বামীর কাছে ভিডিয়োটি এক জন ওয়টস্যাপে পাঠিয়েছিল। উনি দেখে অবাক হয়ে যান। আমরা ওর পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ করতে বলি। মেয়েটির সঙ্গেও কথা বলি। সে আমাকে জানায়, তাকে ভয় দেখিয়ে এক জনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, যে ছেলেটির বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে, সে পলাতক। অভিযোগ, দু’বার ধর্ষণ করা হয়েছে কিশোরীকে। দু’বার আলাদা ভিডিয়ো করা হয় এবং তার পরে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত দু’জনের মধ্যে এক জন সাবালক। পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। বাসিন্দারা জানান, দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অতীতেও এমন অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, এক জনের বিরুদ্ধে আগে মামলাও হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)