Advertisement
E-Paper

সচেতনতা শিবিরের নির্দেশ জারি স্কুলগুলিতে

রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গির ও জ্বরের দাপাদাপির শেষ নেই। বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যাও। ওই ব্যাধির মোকাবিলায় পথে নেমেছে রাজ্য সরকার।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার। আচমকাই জেলার সব স্কুলগুলিতে জেলা ও রাজ্য শিক্ষাদফতরের ডেঙ্গি ও চিকনগুনিয়া নিয়ে সচেতনতা শিবির এবং স্কুলের পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার নির্দেশে মাথায় হাত স্কুল শিক্ষক থেকে শিক্ষাকর্মীদের। অনেকে আবার সেই নির্দেশ না পাওয়ায় হতবাক।

রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গির ও জ্বরের দাপাদাপির শেষ নেই। বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যাও। ওই ব্যাধির মোকাবিলায় পথে নেমেছে রাজ্য সরকার। ওই রোগ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের সর্বস্তরে চলছে প্রচার। এর মধ্যে শুক্রবার বিকেলে রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে সব স্কুলগুলিতে ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া নিয়ে সচেতনতা শিবির ও পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার নির্দেশ জেলার সব স্কুল পরিদর্শকের কাছে হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো হয়। সেই মেসেজ স্কুল পরিদর্শকরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে পাঠায়। এবং ওই নির্দেশে এও লেখা হয়েছে যে কর্তৃপক্ষ কতটা দায়িত্ব নিয়ে নির্দেশ পালন করেছে তার ফলাফল আজই অর্থাৎ সোমবারের মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের স্কুল পরিদর্শককে জানাবে।

এখানেই শুরু হয়েছে নানা বিভ্রান্তি। প্রথমত সব স্কুল পরিদর্শকের উন্নত মানের মোবাইল থাকলেও অনেক প্রধান শিক্ষকের তা নেই। ফলে তাঁদের কাছে মেসেজ পাঠানো কোনও মতে সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত, শনি ও রবিবার ছুটি থাকায় সব প্রধান শিক্ষককে মেসেজ পাঠানো সম্ভব হয়নি। স্কুলে সাফাই অভিযান বা ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে গেলে তার জন্য টাকা বরাদ্দ হওয়ার প্রয়োজন। তাই হাতে গোনা যে কয়েকটি স্কুল নির্দেশিকা পেয়েছিল তারাই তড়িঘড়ি নির্দেশিকা পালন করা হয়েছে বলে মেসেজের মাধ্যমে স্কুল পরিদর্শককে পাঠিয়েছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ৫১টি সার্কেলে প্রায় সাড়ে ৩৭৭৩ টি আপার প্রাইমারি ও প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় যে স্কুল রয়েছে সেখানে মোবাইল পরিষেবা পাওয়া যায় না। ফলে ওই সব স্কুলের পক্ষে সরকারি নির্দেশিকা জানা সম্ভব হয়নি।

প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের একাংশের দাবি, এ ভাবে সকলকে এত দ্রুত মেসেজ পাঠানো সম্ভব নয়। তাই আগে ভাগে জেলা বা রাজ্যে থেকে কোনও নির্দেশ এলে তাঁরা নোটিশ বোর্ড লাগিয়ে স্কুলগুলিতে খবর দিয়ে থাকেন। কিংবা এক শিক্ষক মারফত অন্য শিক্ষকরা বিষয়টি জেনে যান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এত দেরিতে মেসেজ পাঠানো হয়েছে যে সকলকে জানানো সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া শিক্ষা দফতরের প্রতিটি বিভাগে কর্মী ও পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে।

এ বিষয়ে মথুরাপুর ও মন্দিরবাজার সার্কেলের কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা জানান, এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই শোনেননি। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা স্কুলে ভগিনী নিবেদিতার জন্ম সার্ধশতবর্ষ পালনের নির্দেশ পেয়েছি। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সেটাই আজ পালন করা হল।’’ তাঁদের অভিযোগ, আগের বছর পর্যন্ত স্বচ্ছ মিশন পালনের জন্য প্রতিটি স্কুলকে ১০০টাকা করে দেওয়া হত। তাও বছর খানেক ধরে বন্ধ। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মসূচিতে প্রতিটি স্কুলে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের কর্মী দেওয়ার কথা ছিল। তাদের কাজ স্কুল চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখা। তাও বন্ধ হয়ে রয়েছে। শিক্ষকরা বলেন, ‘‘আমরা তো নিজেদের টাকা খরচ করে এ সব সরকারি কাজ করতে পারি না।’’

এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) উত্তমকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাশের জেলায় রোগ যে ভাবে ছড়াছে তার থেকে মুক্তি পেতে তড়িঘড়ি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলের তহবিলের টাকা খরচ করে ব্লিচিং পাউডার ও ফিলাইন কেনা যেতে পারে। স্কুলের পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনার বিষয়ে রিপোর্ট দু’দিন পরে পাঠালে অসুবিধা নেই।’’

Schools Awareness Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy