নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া
বিকেল ৪টে। হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সবে শুরু হয়েছে ‘ভিজিটিং আওয়ার।’ বছর সাতাশের এক যুবক গম্ভীর মুখে ঢুকে পড়লেন। সামনে যাঁকে পেলেন, সেই রোগীর আত্মীয়দের বললেন, ‘‘আমি ডাক্তার। দেখি, কেমন আছে আপনাদের ছেলে।’’
ডাক্তারবাবু এসেছেন ধরে নিয়ে রোগীর আত্মীয়েরাও নানা সমস্যার কথা বলা শুরু করলেন। বেডের কাছে গিয়ে শিশুটিকে দেখেও এলেন ডাক্তারবাবু।
দূর থেকে সে দৃশ্য দেখে সন্দেহ হয় হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর। ডাক্তারবাবুর মুখটা তো চেনা লাগছে না।
শিশুদের ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যুবকটি গেলেন ফিমেল ওয়ার্ডের দিকে। খবর পেয়ে ততক্ষণে সেখানে হাজির নিরাপত্তা কর্মীরা। তাঁরাই ধরে ফেললেন যুবককে।
জানা গেল, ওই যুবক চিকিৎসক তো ননই। বরং তাঁরই মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে।
শুক্রবার বিকেলে এই ঘটনার পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রোগীর আত্মীয় ও সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এ ভাবে এক যুবক ওয়ার্ডের মধ্যে ঢুকে পড়লেন কী ভাবে? ভিজিটি কার্ড ছাড়া কী ভাবে ঢুকতে দেওয়া হলল তাঁকে? কী করছিলেন নিরাপত্তা রক্ষীরা? নিরাপত্তার এই হাল হলে তো যে কোনও দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। বেড থেকে শিশুকে তুলে নিয়ে গেলেই বা কে দেখবে? ওয়ার্ড থেকেও তো রোগী বেরিয়ে যেতে পারেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে নিরাপত্তার জন্য রয়েছে গোটা তেরো সিসি ক্যামেরা। আছেন বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী। হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে দেখার জন্য আত্মীয়-স্বজনদের সকাল ১১টা থেকে ১২টা এবং বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত ওয়ার্ডে ঢুকতে দেওয়া হয়। সে সময়েই কোনও ফাঁক গলে ঢুকে পড়েছিলেন ওই যুবক। তাঁর আত্মীয়দের ডেকে পরে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় যুবককে।
হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘ভিজিটিং কার্ড সম্প্রতি শেষ হয়ে গিয়েছে। ফের ছাপতে দেওয়া হয়েছে। এসেও গিয়েছে। এখন থেকে ওই কার্ড ছাড়া রোগীর পরিবারের কেউ যাতে ওয়ার্ডের মধ্যে ঢুকতে না পারে, তা দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy