চেষ্টা: আগুনে পোড়া বাজারে কাজ করছেন দমকল কর্মীরা। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
আগুনে পুড়ল ১৭০টি দোকান।
বৃহস্পতিবার ভোরে আগুন লাগে কাঁচরাপাড়ার নিউ বিবেকানন্দ মার্কেটে। বাজারে মোট ২৭৮টি পোশাকের দোকান ছিল। অগ্নিকাণ্ডে তার অধিকাংশই পুড়ে ছাই। দমকলের সাতটি ইঞ্জিন ঘণ্টা সাতেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকলের বিরুদ্ধে দেরিতে আসার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার পোশাক পুড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। কী ভাবে আগুন লাগল, সে বিষয়ে এখন নিশ্চিত ভাবে কিছু জানতে পারেনি দমকল। তবে প্রাথমিক ধারণা, শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লাগে।
কাঁচরাপাড়া স্টেশন-লাগোয়া বাজারটি দীর্ঘদিনের পুরনো। মাত্র কয়েকটি দোকান নিয়ে শুরু হলেও ক্রমে কলেবরে বে়ড়েছে। সবই পোশাকের দোকান। তবে কোনও দোকানেরই কাঠামো পাকা নয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর ৩টে নাগাদ বাজারে আগুন লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয় লোকজন দেখতে পান। প্রথমে তাঁরাই জল ছড়িয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে খবর যায় দমকলে।
দমকলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে মানুষের। কাজ করতে করতে এক সময়ে তাদের জল ফুরিয়ে যায় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ এলাকায় আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ভোটের মরসুমে প্রতিশ্রুতি দিতে না পারলেও ‘পাশে থাকার’ কথা বলে গিয়েছেন সকলে
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, হাওয়ার গতি বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। দোকানগুলিতে প্রচুর পোশাক মজুত ছিল বলে আগুনের শিখা একের পর দোকান গ্রাস করতে থাকে। আধ ঘণ্টার মধ্যে শ’খানেক দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘আমরা জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলাম। তবে তাপ এতটাই বেশি ছিল যে, বাজারের ধারে কাছে যাওয়া যাচ্ছিল না। দমকলে খবর দিই। কিন্তু দমকলের ইঞ্জিন আসে অনেক দেরি করে। কিছুক্ষণ কাজ করার পরে তাদের জল ফুরিয়ে যায়। পরে আরও ইঞ্জিন আসে।’’
দমকল অবশ্য দেরিতে যাওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, কাছাকাছি জল না থাকায় অসুবিধা হয়েছিল। পরে সাতটি ইঞ্জিন এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ১৬৭টি দোকান সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও কয়েকটি দোকান।
ওই বাজারের ব্যবসায়ী শম্ভু প্রামাণিক বলেন, ‘‘পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে আমরা নদিয়ার রানাঘাটে ছিলাম। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ একজন পরিচিত ফোনে আগুনের খবর দেন। ৫টা নাগাদ এসে দেখি, সব শেষ।’’ তাঁর স্ত্রী মীরা বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। বেশ কিছু টাকা ঋণ হয়েছিল। ওই দোকানই ছিল একমাত্র ভরসা।’’ দোকান মালিকদেরই সকলেরই প্রশ্ন, এ বার কী ভাবে সংসার চলবে!
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। পরে আসেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক এবং কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধান সুদামা রায়, বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ। আদর্শ নির্বাচন বিধি বলবৎ থাকায় কেউই ব্যবসায়ীদের কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি। তবে সকলেই ‘পাশে থাকার’ আশ্বাস দেন। পুরসভাও সব রকম ভাবে সাহায্য করবে বলে জানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy