E-Paper

হামলার ঘটনায় কমেনি আতঙ্ক, সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা

এক অটোচালকের সঙ্গে বচসার জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ২৫০ জন ওই আবাসনে তাণ্ডব চালায় এবং কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের আধিকারিক প্রদীপ কুমার ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর করে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:১০

—প্রতীকী চিত্র।

আবাসনে ঢুকে কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের এক আধিকারিকের ফ্ল্যাটে হামলা চালানো এবং তাঁকে বেধড়ক মারধরের ঘটনার চার দিন পরেও আতঙ্ক তাড়া করছে সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার ওই আবাসনের বাসিন্দাদের। আতঙ্কিত এলাকার ব্যবসায়ীরাও।

এক অটোচালকের সঙ্গে বচসার জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ২৫০ জন ওই আবাসনে তাণ্ডব চালায় এবং কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের আধিকারিক প্রদীপ কুমার ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে সোনারপুর থানার পুলিশ পৌঁছনোর আগেই ফিরে যায় অটোচালকদের দলটি।

এক বছর আগে ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া এসেছেন প্রদীপ। ঘটনার পরে বাইপাস সংলগ্ন এক বন্ধুর বাড়িতে সপরিবার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। সোমবার প্রদীপ বলেন, ‘‘শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাত আছে। চিকিৎসা চলছে। একটু সুস্থ হলেই ফ্ল্যাটে ফিরব।’’ আবাসন কমিটির সহ-সভাপতি গোরা বসু বলেন, ‘‘প্রায় ৫০-৬০ জন ঢুকেছিল। আর বাইরে ছিল প্রায় ২০০ জন। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ আসে।’’

তবে, বছরখানেক আগে থেকেই সোনারপুর দক্ষিণের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের। তাঁদের মতে, বছরখানেক আগে বিধায়ক অরুন্ধতী মৈত্রের (লাভলি) গাড়িতে হামলার ঘটনার পর থেকে তাঁর গাড়িকে পুলিশের ‘এসকর্ট’ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। যদিও স্থানীয়দের প্রশ্ন, খোদ বিধায়কের যদি নিরাপত্তার ঘেরাটোপের প্রয়োজন হয়, সেখানে তাঁদের নিরাপত্তা কতটা? বিধায়কের অবশ্য দাবি, ‘‘বিধানসভা কেন্দ্রে যানজটের কারণে দ্রুত যাতায়াতের জন্য পুলিশের গাড়ি থাকে। তা নিরাপত্তার জন্য, সে কথা বলা ঠিক নয়। হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। অটোচালকেরা আমাদের কিছু জানাননি।’’

শনিবার আক্রান্ত শুল্ক আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুলিশ-প্রশাসনের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে।’’ বিধায়কের দাবি, এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানে না দল। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি সোনালি রায় বলছেন, ‘‘ওই আবাসন ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। ওখানকার আবাসিকেরা আমার ওয়ার্ডের ভোটার। তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত। ১৮ অগস্ট আমার ওয়ার্ডে ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পে এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ও পুরকর্তাদের জানালেও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সিপিএমের জেলা সম্পাদক রতন বাগচী বলেন, ‘‘চার জনকে ধরা হয়েছে। তবে ধৃতেরা জামিনে মুক্ত।’’

পুরপ্রতিনিধি জানাচ্ছেন, ওই রুটে ৫০-৬০ জন অটোচালক আছেন। অথচ, সে দিন ২৫০ জনেরও বেশি লোক হাজির হয়। তাঁর অভিযোগ, দুষ্কৃতী ও অটোচালকেরা একসঙ্গে হামলা চালিয়েছে। কয়েক জন মহিলাও ছিলেন। বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্তপুলিশ সুপার সৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, দু’টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আক্রান্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের ধারায় মামলাকরা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sonarpur TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy