Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩

জট পাকানো রাস্তা

মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি করে রোগী নিয়ে মহকুমা হাসপাতালে আসা যাওয়ার পথে গাড়ি আটকে পড়ে ওই যানজটে। সাধারণ মানুষের স্কুল, কলেজ, অফিসে বা কর্মস্থলে যেতে দেরি হয়। অনেক সময়েই মানুষ ট্রেন মিস করেন।  

হাঁসফাঁস: প্রায় প্রতি দিনই যশোর রোডে চোখে পড়ে এই দৃশ্য। বনগাঁয় ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

হাঁসফাঁস: প্রায় প্রতি দিনই যশোর রোডে চোখে পড়ে এই দৃশ্য। বনগাঁয় ছবিটি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

যশোর রোডে যানজট নিয়ে বনগাঁর দুঃখ আর ঘুচল না!

Advertisement

মহকুমা হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে যশোর রোড ধরে কলকাতার দিকে যেতে গেলে আটকে পড়তে হয়। পথে বেরিয়ে যানজটে হাঁসফাঁস করেন নিত্যযাত্রীরা। ট্রেন লাইনেও ভিড়। ফলে বনগাঁবাসীর দুর্ভোগের অন্ত নেই।

মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি করে রোগী নিয়ে মহকুমা হাসপাতালে আসা যাওয়ার পথে গাড়ি আটকে পড়ে ওই যানজটে। সাধারণ মানুষের স্কুল, কলেজ, অফিসে বা কর্মস্থলে যেতে দেরি হয়। অনেক সময়েই মানুষ ট্রেন মিস করেন।

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় রাখালদাস সেতু থেকে ১ নম্বর রেলগেট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পেরোতে দিনের ব্যস্ত সময়ে ৩০ মিনিটও লেগে যায়। শহরে যশোর রোডে প্রস্তাবিত রেল সেতুর কাজ নানা জটিলতায় আটকে রয়েছে।

Advertisement

এমনিতে যশোর রোড সংকীর্ণ। পুরসভার তরফে সম্প্রতি ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে। যশোর রোডের যানজট সমস্যার অন্যতম বড় কারণ হল, সাধারণ মানুষ ও যান চালকেরা রাস্তার উপরে বাইক, সাইকেল, ভ্যান, ছোট-বড় গাড়ি বেআইনি ভাবে দাঁড় করিয়ে রাখেন। ফলে রাস্তা আরও সরু হয়ে যায়। যার ফলে দুর্ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে নানা সময়ে। এমনও দেখা যায়, রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে মানুষ দোকান-বাজার সারছেন। নিউ মার্কেট এলাকায় বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলেন। ওই এলাকার পেট্রল পাম্পে ঢোকার আগে গাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। সব মিলিয়ে যানজট বাড়ি। তা ছাড়া পণ্যবাহী ট্রাক নির্দিষ্ট সময় না মেনে মাঝেমধ্যে শহরের রাস্তায় যাতায়াত করার ফলে যানজট বাড়ছে।

শহরবাসী মনে করেন, টানা ভ্যানের দাপটেও শহরে যানজট বাড়ছে। পুরসভার অনুমোদিত ভ্যানের সংখ্যার তুলনায় রোজ শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভ্যান। পুরসভা সূত্রের খবর, অনুমোদিত ভ্যানের সংখ্যা প্রায় তিনশো। কিন্তু বাস্তবে এক হাজারের বেশি ভ্যান শহরে চলে। শহরে রাস্তায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে, যত্রতত্র ভ্যান দাঁড়িয়ে আছে। যানজটে আটক পড়লে দেখা মিলবে সার সার ভ্যান দাঁড়িয়ে রয়েছে। শহরের ভ্যান ছাড়াও গ্রামীণ এলাকা থেকে ভ্যান চালকেরা শহরে এসে ভাড়া খাটেন। অতীতে বনগাঁ পুরসভার তরফে শহরের বাইরে থেকে আসা ভ্যান চলাচলের উপরে নিয়ন্ত্রণ রেখেছিল। বলা হয়েছিল, বাইরে থেকে আসা ভ্যান চালকেরা যাত্রী নিয়ে শহরে আসতে পারবেন, কিন্তু যাত্রী নামিয়ে ফিরে যেতে হবে। ধরপাকড় চলেছিল। শহরবাসীর বক্তব্য, ‘‘সে সময়ে ভ্যানের দাপট কমেছিল। বাস্তবে এখন ওই নজরদারি নেই পুরসভার। ভ্যান চালকেরাও বাইরে থেকে যাত্রী নিয়ে সারা দিন শহরে ভাড়া খাটছেন।’’

পুরসভার তরফে বেশ কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। যশোর রোডে বেআইনি যানবাহন রাখা বন্ধ করতে হীরালাল মূর্তি এলাকায় পার্কিং তৈরি হয়েছে। আগে শহরের রাস্তার উপরে বাস দাঁড়িয়ে থাকত। মতিগঞ্জ এলাকায় বাস টার্মিনাল তৈরি করা হয়েছে। বাস এখন আর রাস্তায় দাঁড়ায় না। গাঁধীপল্লি এলাকায় সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস তৈরির কাজ চলছে। ১ নম্বর রেলগেট থেকে ২ নম্বর রেলগেট এলাকা পর্যন্ত চওড়া বাইপাস রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। রাস্তাটি পুরোপুরি শেষ হলে শহরের যানজট কমবে বলে মনে করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

ভ্যানের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণহীন টোটো ও অটো শহরের যানজট বাড়াচ্ছে বলে শহরবাসী মনে করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.