Advertisement
E-Paper

জোড়া খুনের সূত্র ধরে জট কাটল শেখ মুন্না হত্যার

পুলিশ সূত্রের খবর, সেই খুন চাপা দিতেই সে মহম্মদ সালাউদ্দিন এবং প্রকাশ সাউকে খুন করে। শুক্রবার পুলিশ দাদ্দার আরও দুই সঙ্গীকে মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম মহম্মদ চাঁদ এবং মহম্মদ ছোটকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:১০
চাঁদ ও ছোটকাকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

চাঁদ ও ছোটকাকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

জোড়া খুনের তদন্তে নেমে অন্য একটি খুনের সমাধান করে ফেলল ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি টিটাগড়ের শেখ মুন্না ওরফে কালা মুন্না খুনের পিছনেও যে ড্রাগ মাফিয়া দাদ্দা রাজু রয়েছে, তা এত দিনে জানতে পেরেছে ঘোলা থানার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, সেই খুন চাপা দিতেই সে মহম্মদ সালাউদ্দিন এবং প্রকাশ সাউকে খুন করে। শুক্রবার পুলিশ দাদ্দার আরও দুই সঙ্গীকে মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম মহম্মদ চাঁদ এবং মহম্মদ ছোটকা। তদন্তে জানা গিয়েছে, সালাউদ্দিন খুনের ঘটনায় তাদের যোগ রয়েছে। তাদেরকেও খুনের মামলায় হেফাজতে চাইছে পুলিশ।

সপ্তাহখানেক আগে ঘোলা থানার সদরহাটের একটি ঝিলের ধারের ঝোপ থেকে সালাউদ্দিন এবং প্রকাশের দেহ মেলে। দু’জনেই টিটাগড়ের বাসিন্দা। তদন্তে নেমে পুলিশ টিটাগড়ের উড়নপাড়ার একটি ঘরে ঢোকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পায়। তাতে সালাউদ্দিন, প্রকাশের সঙ্গে চাঁদ এবং ছোটকা নামের দুই দুষ্কৃতীকে ঢুকতে দেখা যায়। সেটিই ছিল দাদ্দার ডেরা। সেই সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। জানা যায়, দাদ্দার নির্দেশেই সালাউদ্দিন ও প্রকাশকে খুন করা হয়েছে। পিছনের দরজা দিয়ে তাদের দেহ বার করা হয় বলে সিসি ক্যামেরায় তা ধরা পড়েনি। দাদ্দার ভাই এই মহম্মদ চাঁদ। তাদের গ্রেফতারের আগেই অবশ্য টিটাগড় থানার পুলিশ মাদক পাচারের অভিযোগে দাদ্দাকে গ্রেফতার করেছিল। পরে এই মামলাতেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।

জোড়া খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, শেখ ফারমান নামে এক যুবক সালাউদ্দিনকে ফোন করে দাদ্দার ডেরায় ডেকেছিল। চাঁদ এবং ছোটকাকে জেরা করে জানা যায়, ফারমানের সঙ্গে শেখ পিন্টু নামে এক জন দাদ্দার নির্দেশে এই কাজ করেছিল। গত শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। দু’জনকে জেরা করে জানা যায়, সালাউদ্দিনকে দিয়ে শেখ মুন্না ওরফে কালা মুন্নাকে খুন করায় দাদ্দা।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৪ জানুয়ারি টিটাগড়ের পীরঘাট এলাকায় গঙ্গার ধারের একটি ঝোপ থেকে কালা মুন্নার দেহ পাওয়া যায়। দেহে কোনও ক্ষত ছিল না। তবে পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা শুরু করেছিল। ময়না-তদন্তে জানা যায়, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছিল তাকে। তার পরেও খুনের কোনও সূত্র পায়নি পুলিশ।

চাঁদ-ফারমানদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, কালা মুন্না এক সময়ে দাদ্দার ঘনিষ্ঠ ছিল। মাঝে বছর তিনেক অসুস্থ থাকায় মাদক পাচারের কারবার দেখত তার আত্মীয়েরা। সেই সময়ে দাদ্দাকে ধোকা দিয়েছিল মুন্না। সেই জন্য তাকে সরানোর ছক কষে দাদ্দা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সে কাজেই লাগানো হয়েছিল সালাউদ্দিনকে। সম্প্রতি মুন্নাকে খুনের ঘটনার জন্য টাকা চেয়ে দাদ্দাকে ব্ল্যাকমেল করছিল সালাউদ্দিন। সে কারণে তাকেও সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে দাদ্দা। প্রকাশ কোনও ভাবে জোড়া খুনে জড়িত না থাকলেও সে ছিল সালাউদ্দিনের ব্যবসার অংশীদার। সে মুন্না-খুনের ঘটনাও জানত। তাই তাকেও খুন করা হয়।

রবিবার সন্ধ্যায় ধৃত চাঁদ ও ছোটকাকে নিয়ে দাদ্দার ডেরা এবং দেহ যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছিল, সেই জায়গাগুলিতে যায় তদন্তকারী দল। এ দিন গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। পুলিশ মনে করছে, ধৃত দাদ্দা এবং তার সঙ্গীদের জেরা করে আরও রহস্যের জট কাটবে।

Crime Barrackpore Police Commissionarate Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy