ধৃত: পুলিশের সঙ্গে সেলিম। —নিজস্ব চিত্র
চোখে চোখে কথা হয়ে গেল ওঁদের। হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ওই মুটে-মজুররা। পরনে লুঙ্গি, ছেঁড়া গেঞ্জি, মাথায় গামছার ফেট্টি।
সোমবার রাত তখন প্রায় ১২টা। প্ল্যাটফর্মেই দৌড়ে এক যুবককে ধরে ফেলেন কয়েকজন মুটে। বাকিরা তাকে ঘিরে নিয়ে বেরিয়ে যান স্টেশন ছেড়ে।
পরে জানা গেল, মুটে-মজুরের ছদ্মবেশে ছিলেন বনগাঁ থানার অপরাধ দমন শাখার সদস্যেরা। এক কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্তকে তাঁরা গ্রেফতার করেছেন হাওড়া স্টেশন থেকে। ধৃতের নাম মহম্মদ গুলজার হোসেন ওরফে সেলিম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বনগাঁর বছর ষোলোর এক কিশোরীকে অপহরণ করে পাচারের চেষ্টায় ছিল সে।
মেয়েটি ১১ এপ্রিল বাড়ি ছেড়েছিল ঝাড়খণ্ডে প্রেমিকের কাছে যাবে বলে। চাকদহ থেকে শিয়ালদহে পৌঁছয়। সেখান থেকে যায় হাওড়া স্টেশনে। পর দিন সেখানেই মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় হয় সেলিমের। পকেটমারিতে তার হাতযশ আছে। নাম আছে পুলিশের খাতাতেও।
মেয়েটির অভিযোগ, সেলিম তাকে বলেছিল, প্রেমিকের কাছে পৌঁছে দেবে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যাওয়ার বদলে মেয়েটিকে সে নিয়ে যায় মুর্শিদাবাদে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ১৫ এপ্রিল মেয়েটিকে নিয়ে কলকাতায় ফেরে সেলিম। এনআরএস হাসপাতাল এলাকায় রাত কাটায়। পুলিশের দাবি, মেয়েটিকে গুজরাতে পাচার করার ছক ছিল সেলিমের।
এনআরএস হাসপাতাল এলাকায় মজুরের কাজ করেন স্বরূপনগরের আহমেদ মণ্ডল। সেলিম তার পূর্ব পরিচিত। কিশোরীকে চোখে চোখে রাখতে বলে সোমবার ভোরে বেরিয়ে যায় সেলিম। তখনই সব কথা আহমেদকে বলে ওই কিশোরী। বাড়ির ঠিকানাও জানায়। কিশোরীকে সঙ্গে করে বনগাঁ থানায় আসেন আহমেদ। পরে পুলিশ তাঁকে নিয়ে হাওড়া স্টেশনে যায়। আহমেদই পুলিশকে জানিয়েছিলেন, সেলিম প্ল্যাটর্ফমে ঘোরাঘুরি করে। সুযোগ পেলে সেখানেই পকেট কাটে। দূর থেকে তাকে চিনিয়েও দেন আহমেদ। ধরাও পড়ে যায় সেলিম।
আহমেদের কথায়, ‘‘মেয়েটার কথা শুনে মায়া হয়েছিল। মনে হয়েছিল, বাজে লোকের খপ্পরে পড়েছে। ওকে যে ভাবে হোক বাঁচাতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy