Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অসুস্থ শিশুকে গাড়ি করে হাসপাতালে পৌঁছে দিল পুলিশ

চিকিৎসাধীন শিশু। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসাধীন শিশু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:২০
Share: Save:

গুরুতর অসুস্থ এক শিশুকে নিজের গাড়িতে করে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন বসিরহাট জেলার এক পুলিশকর্তা। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনায় আপ্লুত মাত্র উনিশ মাস বয়সি ওই শিশুর বাবা-মা সহ প্রতিবেশীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সময়মতো পুলিশকর্তা তাঁর গাড়িতে বাচ্চাটিকে তুলে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা না করলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত না।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল পৌনে ন’টায় বারাসতে জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার। টাকি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে বসিরহাটের মাটিয়া থানা এলাকার শিকড়া-কুলিনগ্রামে রাস্তার পাশের এক জটলা দেখে গাড়ি দাঁড় করিয়ে খোঁজখবর করে তিনি জানতে পারেন, মেঘনা সাঁতরা নামে এক অসুস্থ বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির খোঁজ করছেন তার বাবা-মা-সহ প্রতিবেশীরা। শবরী দ্রুত তাঁর গাড়িতে তাঁদের তুলে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে গাড়ি ছোটান। ততক্ষণে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। খিঁচুনি শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় পুলিশ সুপারের গাড়ি পৌঁছয় ধান্যকুড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে শিশুর চিকিৎসা শুরু হয়। পুলিশ জানায়, সেখানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় তাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ততক্ষণে অবশ্য মাটিয়া থানার ওসিকে ডেকে নিয়েছেন পুলিশ সুপার। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে শিশুটিকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর স্বাভাবিক হয় মেঘনা।

হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে মেঘনার বাবা মুন্না এবং মা সুপর্ণা বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে মেয়েটা অসুস্থ। গ্রামের চিকিৎসক দেখছিলেন। এ দিন সকালে বাড়াবাড়ি হয়। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ির খোঁজ করছিলাম। গাড়ি পাচ্ছিলাম না। এই সময়ে পুলিশকর্তা আমাদের বিপদ দেখে যে ভাবে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তাতে আমরা ওঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’’

পুলিশের এ হেন কাজে উচ্ছ্বসিত শিকড়া-কুলিনগ্রামের বাসিন্দারাও। পুলিশকর্তার অবশ্য সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘পুলিশের কাজ পুলিশ করেছে।’’ তা শুনে এক গ্রামবাসীর বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে যদি সব পুলিশই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তা হলে দেশটা অন্য রকম হয়ে যায়।’’

বসিরহাট জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকের পক্ষে জানানো হয়, মেঘনাকে সময়মতো হাসপাতালে না আনা হলে ওর জীব‌নসংশয় হতে পারত। প্রয়োজনীয় ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং অক্সিজেন দেওয়ায় বিকেলের দিক থেকে মেঘনা খানিকটা স্বাভাবিক বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Child Health Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE