বনগাঁ পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে বনগাঁ শহরে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির তৈরি হতে চলেছে। পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে জগদ্ধাত্রী মোড় এলাকায় বুধবার মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। মন্দির তৈরি হচ্ছে তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার সহযোগিতায়।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে মতুয়াদের মন পেতে তৃণমূল নতুন নাটক শুরু করেছে! অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এইউদ্যোগের সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই।
মতুয়াদের নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির উৎসাহ নতুন নয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরে গিয়ে সে দেশে মতুয়াদের পীঠস্থান ওড়াকান্দি গিয়েছিলেন। বনগাঁ শহরে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের যে মন্দির তৈরি হবে, সেখানে ওড়াকান্দি থেকে জল-মাটি এনেছেন বনগাঁর মতুয়া ভক্তেরা। বুধবার সকালে পুরপ্রধান গোপাল শেঠ মতুয়া ভক্তদের নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্তে গিয়ে ওড়াকান্দির জল-মাটি গ্রহণ করেন। সঙ্গে ছিলেন কাউন্সিলররা।
এ দিন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পুরপ্রধান। ছিলেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূলের মমতা ঠাকুর। মতুয়া ভক্ত, দলপতি, গোসাঁই, পাগলেরা ডাঙ্কা-নিশান নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন।
মন্দির তৈরি করছেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাসকারী মতুয়া ভক্ত এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। গোপাল বলেন, ‘‘এই ওয়ার্ডে একশো শতাংশ মানুষই মতুয়া সমাজের। ওড়াকান্দিতে থাকা মন্দিরের আদলে এখানে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির তৈরি করা হচ্ছে। ওড়াকান্দি থেকে জল-মাটি আনা হয়েছে। মন্দির তৈরির পাশাপাশি হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের লীলা প্রচার করা হচ্ছে।’’
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘মন্দির হচ্ছে, তা ভাল কথা। আমরাও চাই প্রত্যেক জায়গায় মন্দির তৈরি হোক। তবে ভুঁইফোড় তৃণমূল নেতারা লোকসভা ভোটের আগে মতুয়া সমাজের মন পেতে মন্দির তৈরির নামে নাটক করছেন। এ সব করে কোনও লাভ হবে না। ২০১৯ সালেই মতুয়ারা তৃণমূলকে মন থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।’’ দেবদাসের দাবি, তৃণমূল মতুয়াদের যদি সত্যিই ভাল চাইত, তা হলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-এর বিরোধিতা করতেন না। এই প্রসঙ্গেই তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ কার্যকর করবেই।
গোপাল বলেন, ‘‘বিজেপি ভাল কাজের প্রশংসা করতে জানে না। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে। ভগবান রামকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরকে আমরা শ্রদ্ধা করি। তাঁর সম্প্রীতির বাণী প্রচার করি।’’ মম্দির তৈরির সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি গোপালের। অন্য দিকে, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁ প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকে এখনও সিএএ কার্যকর করা যায়নি। এখন ভোটের আগে কেন্দ্রের মন্ত্রীরা রাজ্যে এসে নাগরিকত্ব নিয়ে ফের ভাঁওতা দিচ্ছেন। সদিচ্ছা থাকলে মতুয়া উদ্বাস্তুদের নিঃশর্তে নাগরিক ঘোষণা করে দিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy